পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন বলেছেন, প্রতিবছর পৃথিবীতে ১৩ মিলিয়ন হেক্টর বন ধ্বংস হচ্ছে। ফলে প্রকৃতির ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ছে। সময় এসেছে নিজেদের বেঁচে থাকার স্বার্থে প্রকৃতির সবুজ বন-বনানী রক্ষায় একযোগে কাজ করার। এ লক্ষ্যে গ্রামীণ জনগণকে সম্পৃক্ত করে সামাজিক বনায়নের মাধ্যমে বনজ সম্পদ বৃদ্ধিতে সরকার আন্তরিকভাবে কাজ করছে।শনিবার ঢাকার আগারগাঁওয়ের বন অধিদফতরে ‘বন ও জীববৈচিত্র্য মূল্যবান অতি, হারালে অপূরণীয় ক্ষতি’ প্রতিপাদ্যে আয়োজিত আন্তর্জাতিক বন দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন মন্ত্রী।
তিনি বলেন, নার্সারি সৃজন, প্রান্তিক ও পতিত ভূমিতে বৃক্ষরোপণ করে বনজ সম্পদ বৃদ্ধি করা হচ্ছে। ক্ষয়িষ্ণু বনাঞ্চল রক্ষা, পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এবং দারিদ্র্য নিরসনে সামাজিক বনায়ন কর্মসূচি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
মন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকারের আমলে সফল সামাজিক বনায়নের আবর্তকাল উত্তীর্ণ গাছ আহরণ করে এ পর্যন্ত ১ লাখ ৬৮ হাজার ৫শ ৬৪ জন দরিদ্র উপকারভোগীর মধ্যে ৩৫৬ কোটি ৮২ লাখ ৩৪ হাজার ৫২২ টাকা বিতরণ করা হয়েছে। দেশে এ পর্যন্ত ২ হাজার বর্গকিলোমিটার নতুন জেগে ওঠা উপকূলীয় চরে বন সৃজন করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, জাতির পিতার জন্মশতবর্ষে তার মন্ত্রণালয় এক কোটি গাছের চারা রোপণ করবে। বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে সরকারের গৃহীত বিভিন্ন কার্যক্রম এবং জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের মাধ্যমে বর্তমানে দেশের বৃক্ষ আচ্ছাদিত ভূমির পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়ে দেশের মোট আয়তনের ২২.৩৭ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। ২০২৫ সালের মধ্যে ২৪ শতাংশের বেশি উন্নীত করার পরিকল্পনা রয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, বন সেক্টরের প্রধান লক্ষ্য বনভূমির টেকসই ব্যবস্থাপনার ভিত্তিতে ‘ফরেস্ট ইনভেস্টমেন্ট প্ল্যান’ তৈরি। বাংলাদেশের বন ও বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনাকে অধিকতর গুরুত্ব প্রদান করে ৪৮টি এলাকাকে ‘‘রক্ষিত এলাকা’ ঘোষণা করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে বনমন্ত্রী সামাজিক বনায়নের সাত জন উপকারভোগীর মাঝে বিশ লাখ টাকার চেক বিতরণ করেন।
বন অধিদফতরের প্রধান বন সংরক্ষক মোহাম্মদ সফিউল আলম চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় অন্যান্যের মধ্যে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার, সচিব জিয়াউল হাসান, এনডিসি এবং অতিরিক্ত সচিব ড. মোঃ বিল্লাল হোসেন ও ব্রাক ইউনিভার্সিটির এমিরেটাস অধ্যাপক ড. আইনুন নিশাত, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।