হাসপাতাল থেকে ‘পালিয়ে যাওয়া’ কাতার প্রবাসী খোঁজ মিলেছে

শরীরে করোনা ভাইরাসের লক্ষণ আছে শুনে হাসপাতাল থেকে ‘পালিয়ে যাওয়া’ কাতার প্রবাসী আবুল কাশেম সম্পূর্ণ সুস্থ আছেন বলে জানিয়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পা কর্মকর্তা ডা. অভিজিৎ রায়। আবুল কাশেম নাসিরনগর উপজেলার চাতলপাড় ইউনিয়নের ধানতলিয়া গ্রামের আহম্মদ আলীর ছেলে।

৩ মার্চ আবুল কাশেম কাতার থেকে দেশে ফেরেন। তিনি ও তার পরিবারের সদস্যদের শরীরে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার কোনো লক্ষণ নেই। জেলা সদর হাসপাতালের ‘করুণ অবস্থা’ দেখে বাড়ি চলে গিয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন কাশেম।জেলা সদর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, আবুল কাশেম ১৮ মার্চ সন্ধ্যায় জ্বর, সর্দি-কাশি ও শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা নিয়ে নাসিরনগর থেকে জেলা সদর হাসপাতালে আসেন। হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক এ.বি.এম মুছা চৌধুরী তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ভর্তি হওয়ার পরামর্শ দেন।

তখন ওই প্রবাসী ভর্তির জন্য হাসপাতালের মেডিসিন ওয়ার্ডে যাওয়ার কিছুক্ষণ পর আবার জরুরি বিভাগে এসে চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলেন। তখন চিকিৎসক করোনা ভাইরাসের লক্ষণ আছে উল্লেখ করে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার কথা জানান তাকে। এসব শোনার পর ভয়ে কাউকে কিছু না বলেই হাসপাতাল থেকে তিনি ‘পালিয়ে যান’ বলে জানায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

‘পালিয়ে যাওয়ার’ খবর পেয়ে নাসিরগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ প্রবাসী আবুল কাশেমকে খুঁজে বের করে। শনিবার তার শারীরিক বেশ কিছু পরীক্ষা-নীরিক্ষাও করানো হয়। পরীক্ষা-নীরিক্ষার পর তিনি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত নন বলে জানায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ।

প্রবাসী আবুল কাশেম সাংবাদিকদের বলেন, চিকিৎসক আমকে ওষুধ ও ইনজেকশন দিয়ে বলেছিল হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার জন্য। ভর্তি হওয়ার জন্য গিয়ে দেখি হাসপাতালের অনেক করুণ অবস্থা। মানুষ উপরে-নিচে পড়ে আছে। মশা-মাছির মাঝে ইনজেকশন দেয়ার মতো কোনো পরিবেশ নেই। তাই আমি গ্রামে চলে আসি এবং গ্রামের ডাক্তার দিয়ে ইনজেকশন দেই। এরপর গুজব ছড়ানো হয় করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত অবস্থায় আমি হাসপাতাল থেকে পালিয়ে গেছি। আমি একদম সুস্থ মানুষ, আমার মধ্যে করোনা ভাইরাসের কোনো চিহ্নই নেই।

নাসিরনগর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পা কর্মকর্তা ডা. অভিজিৎ রায় জানান, ওই প্রবাসীকে নিয়ে গুজব ছড়ানো হচ্ছে। তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ, তার পরিবারেরও কেউ অসুস্থ নয়। যদি তিনি করোনায় আক্রান্ত হতেন তাহলে তার পরিবারও আক্রান্ত হতো।

তিনি আরও বলেন, আবহাওয়া বদলের কারণে তার জ্বর আসতেই পারে। সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে যাওয়ার পর প্রবাসী শুনে তাকে ভর্তির পরামর্শ দেয়া হয়েছিল। পরিবেশ দেখে তার ভালো লাগেনি বলে ভর্তি হননি।

এ ব্যাপারে জেলা সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. শওকত হোসেন বলেন, তাদের জন্য আমাদের আলাদা আইসোলেশন রুম আছে। তাকে আমাদের প্রটেকশন দিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল। তিনি নিজে ঘুরে পরিবেশ পছন্দ হয় কি না সেটা দেখতে পারেন না। যদি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হতেন তাহলে তো পুরো হাসপাতালকে আক্রান্ত করে ফেলতেন তিনি।

সোস্যাল নেটওয়ার্ক

সর্বশেষ সংবাদ