ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে ভয়াবহ যানজটের কবলে পড়েছেন ঘরমুখো যাত্রীরা। গাবতলী থেকে যমুনা সেতু পর্যন্ত পৌঁছতেই লেগেছে ১৭ ঘণ্টা! এতে নাকাল হয়ে পড়েছেন বাসে থাকা নারী-শিশুসহ সবাই।
জানা গেছে, শনিবার দুপুর দুইটায় গাবতলী থেকে রওনা দেয়া বাসগুলো যমুনা সেতু পৌঁছেছে আজ রোববার সকালের দিকে। সেতু পার হয় আটটার দিকে।
গতকাল সকাল থেকেই বঙ্গবন্ধু সেতুর পূর্ব প্রান্ত থেকে মির্জাপুর পর্যন্ত ৪০ কিলোমিটার এবং মির্জাপুর থেকে গাজীপুরের চন্দ্রা পর্যন্ত ২৫ কিলোমিটার তীব্র যানজট দেখা দেয়। গাড়ি থেমে থেমে চলছিল। কিছুদূর যাওয়ার পর আবার এক জায়গাতেই থেমে থাকছে কয়েক ঘণ্টা।
চরম ভোগান্তিতে পড়া যাত্রীরা সকাল পৌনে ১১টার দিকে মহাসড়কের রাবনা বাইপাস এলাকায় দুটি গাড়ি ভাঙচুর করেন।
কয়েকজন যাত্রী জানান, তারা শনিবার দুপুর দুইটায় গাবতলী থেকে রংপুরের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন। সেই বাস আজ রোববার সকালে সেতু পার হয়েছে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা গাড়িতে বসে থেকে সবার অবস্থা নাজেহাল।
সকালে দেখা গেছে, গাড়ি থেমে থাকায় অনেকেই নেমে সড়কের পাশে বসে বিশ্রাম নিচ্ছেন। কেউ কেউ টয়লেট সারছেন। যানজট ও গরমে অতিষ্ঠ হয়ে অনেকেই আবার সড়কের পাশের পুকুরে গোসলে নেমেছেন।
মহাসড়কের গোড়াই এলাকায় নির্মানাধীন আন্ডার পাস (অভার ব্রিজ) এলাকার দুই পাশে তীব্র যানজট। মহাসড়কের চন্দ্রা, বাইপাইল ও শফিপুরের অসহনীয় যানজট চলছে বলে যাত্রীরা জানিয়েছেন।
পুলিশ জানায়, ঈদকে সামনে রেখে এই মহাসড়ক দিয়ে টাঙ্গাইল, জামালপুর, শেরপুর জেলার যানবাহন ছাড়াও উত্তরাঞ্চলের ২২টি জেলার অন্তত ৫০টি রোডের যানবাহন চলাচল করছে। মহাসড়কে যানবাহনের চাপ বৃদ্ধি পাওয়ায় যানজট সৃষ্টি হচ্ছে।
মহাসড়কের গোড়াই এলাকায় প্রায় আধা কিলোমিটার মহাসড়কে আন্ডার পাস (ওভারব্রিজ) নির্মাণ হচ্ছে। কর্তৃপক্ষের চরম অব্যবস্থাপনা ও অবহেলার কারণে এই এলাকায় যানজট দীর্ঘ দিন ধরে। একই অবস্থা টাঙ্গাইল পাইপাস, এলেঙ্গা ও বঙ্গবন্ধু সেতু এলাকায় বলে পুলিশ জানিয়েছে।
কুরবানি ঈদকে সামনে রেখে যাত্রীদের দুর্ভোগ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে এই অসমাপ্ত আন্ডার পাস। একই অবস্থা মহাসড়কের করনি আন্ডার পাস, কদিম ধল্যা আন্ডার পাস, জামুর্কি আন্ডার পাস ও নাটিয়াপাড়া ও করটিয়া আন্ডার এলাকায় চলছে যানজট। অসময়ে আন্ডার পাসগুলো নির্মাণের ফলে এ যানজটের মূল কারণ বলে পরিবহন শ্রমিক, চলাচলকারী যাত্রী ও পুলিশ জানায়।
টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শফিকুল ইসলাম বলেন, মহাসড়কে গাড়ির সংখ্যা অনেক। এর মধ্যে আবার মালবাহী ও যাত্রীবাহী অতিরিক্ত ট্রাক রয়েছে। বঙ্গবন্ধু সেতুর দুই প্রান্তেই যানজট লেগে রয়েছে।
সেজন্য সেতুর টোল নেওয়ার কাজ দেড় ঘণ্টা বন্ধ রাখা হয়েছিলো। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চলছে।