করোনায় ক্ষতিগ্রস্থ অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে- প্রয়োজন উদ্যোক্তা বান্ধব বাজেট

মতামত/ ডেস্ক রিপোটঃ৩জুন

বিশ্ব অর্থনীতি নিঃসন্দেহে একটি চরম খারাপ সময় পার করছে। মানুষের জীবন এবং জীবিকা দুটোই আজ সংকটের মুখে। বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়। বাংলাদেশ এমনিতেই গরীব দেশ। এখানে বেকারত্ব বেশি, দরিদ্র মানুষের সংখ্যা বেশি। করোনার প্রভাবে অবস্থা আরো অবনতি হয়েছে। বেকারত্ব ও দারিদ্র্য উভয়ই বেড়েছে।

তবে একথা অস্বীকার করার উপায় নেই যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রজ্ঞা ও দক্ষ নেতৃত্বের ফলে সংকট কিছুটা প্রশমিত করা সম্ভব হয়েছে। কিন্তু সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়নি। পৃথিবীর কোন দেশই পারেনি। সরকারের নানামুখী পদক্ষেপ জনগণকে আশঙ্কার মাঝে আশার আলো দেখাচ্ছে, কিন্তু আশঙ্কা কাটেনি। মৃত্যুভয় দূরে ঠেলে দিয়ে জীবিকার তাগিদে মানুষ ঘর থেকে বের হয়ে আসছে, অর্থনৈতিক শঙ্কা বাধ্য করছে। অর্থনীতির এই সংকট সময়ে কেমন হওয়া উচিৎ এবারের বাজেট?

আমি মনে করি তিনটি বিষয় এবারের বাজেটে অধিক গুরুত্ব পাওয়া উচিৎ। যেমন- স্বাস্থ্য সেবা, শিক্ষা এবং বেকারত্ব নিরসনের মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচন। উদ্যোক্তা বান্ধব বাজেট প্রণয়ণের মাধ্যমে এই তিনটি বিষয়কে গুরুত্ব দেওয়া সম্ভব হবে। স্বাস্থ্য খাতে বেশি বেশি বিনিয়োগের জন্য বেসরকারি উদ্যোক্তাদের উৎসাহিত করতে হবে। চাইলে মেডিক্যাল ট্যুরিজমকে রপ্তানি খাত হিসেবেও ঘোষণা করা যেতে পারে। এতে দেশের স্বাস্থ্যখাতে সেবার মান উন্নত হবে এবং নতুন নতুন কর্ম সংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে।

করোনায় বেসরকারি খাতে কর্মরত অনেক মানুষ বেকার হয়েছেন। অনেক প্রবাসী চাকুরি হারিয়ে দেশে ফেরত এসেছেন। অনেকে দেশে এসে ফিরতে পারেননি। তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হতে হবে। ডিজিটাল প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে এখনকার সময়ে ব্যবসা করা অত্যন্ত সহজ। প্রয়োনীয় প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে তাদেরকে ক্ষুদ্র ও মাঝারি আকারের ব্যবসা পরিচালনায় দক্ষ করে তোলা যেতে পারে। সহজ শর্তে ও স্বল্প সুদে ঋণ পাওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। ক্ষুদ্র ও মাঝারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রতিষ্ঠার পর অন্তত তিন বছর যে কোন ধরণের করের আওতামুক্ত রাখার বিষয়টি বিবেচনায় নিতে হবে।

নতুন উদ্যোক্ত তৈরিতে কার্যকর প্রকল্প হাতে নেওয়া গেলেই কেবল টেকসই লক্ষ্যমাত্র অর্জন সম্ভব হবে। তরুণ প্রজন্মকে উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য উৎসাহিত করতে হবে। তাদের জন্য জেলায় জেলায় কারিগরি সহায়তা কেন্দ্র করতে হবে। এক্ষেত্রে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরকে আরও কার্যকর ভূমিকা নিতে হবে। ইউনিয়ন পর্যায়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে কারিগরি বিভাগ খোলার ব্যবস্থা করা ডেতে পারে। এর ফলে শিক্ষার্থীরা ব্যবহারিক জ্ঞান লাভ করে সমৃদ্ধ হবে এবং নিজ উদ্যোগে নতুন কিছু করার সাহস অর্জন করবে।

সর্বোপরি, উদ্যোক্তা বন্ধব বাজেট দীর্ঘ মেয়াদে দেশের অর্থনৈতি উন্নয়নকে তরান্বিত করতে। তাই এবারের বাজেটে এসকল বিষয় অধিকতর গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করা যেতে পারে।

লেখক: সহ-সভাপতি, উদ্যোক্তা অর্থনীতিবিদ ক্লাব( সংগৃহিত-দৈনিক ইত্তেফাক)০৩/০৬/২১ইং

সোস্যাল নেটওয়ার্ক

সর্বশেষ সংবাদ