হোসেন বাবলাঃ১৪জুলাই,চট্টগ্রাম
২০২১ সালের ঈদুল আজহা উপলক্ষে অনলাইনে পশু বিক্রির ব্যবস্থা নিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও ই–কমার্স ব্যবসায়ীদের সংগঠন ই-কমার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ই-ক্যাব)।অনলাইনে কেনা কোরবানির পশুতে কোনো ত্রুটি পেলে ফোনে বা ই–মেইলে ই-ক্যাবের কাছে অভিযোগ করা যাবে।
সম্প্রতি রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে এক কর্মশালার মাধ্যমে অনলাইনে পশু বিক্রয়ের নির্দেশিকার খসড়া প্রস্তাব করে ই-ক্যাব। খসড়াটি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে।
ডিজিটাল হাটের খসড়া নির্দেশনা অনুযায়ী, ক্রেতার কাছে পাঠানো পশু ত্রুটিযুক্ত হলে তাৎক্ষণিকভাবে ক্রেতাকে একই দামের আরেকটি পশু দিতে হবে। এ ছাড়া বিক্রেতা যথাসময়ে পশু সরবরাহ করতে ব্যর্থ হলে পশুর দামের দ্বিগুণ অর্থ ক্রেতাকে দিতে বাধ্য থাকবে।
কেনা পশুতে কোনো অনিয়ম দেখলে ক্রেতা ফোন বা ই-মেইলের মাধ্যমে ই-ক্যাবে অভিযোগ জানাতে পারবেন। অভিযোগ গ্রহণের সর্বোচ্চ তিন কার্যদিবসের মধ্যে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন বা বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মারস এসোসিয়েশন এবং ই-ক্যাব সমন্বিত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দোষী চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেবে।
খসড়া নির্দেশিকায় আরও জানানো হয়েছে, অনলাইনে কেনা পশুর ডেলিভারির দায়িত্ব বিক্রেতার। এক্ষেত্রে বিক্রেতা ক্রেতার কাছ থেকে কোনো অতিরিক্ত টাকা দাবি করতে পারবে না। এমনকি অন্য জেলা থেকে পশু ডেলিভারি করার ক্ষেত্রে, পরিবহনের সময় পশুর কোনো ক্ষতি হলে তার দায় বিক্রেতাকে নিতে হবে।
ডিজিটাল হাটে কার্ডের মাধ্যমে মূল্য পরিশোধের সুযোগ রয়েছে। এ ছাড়া ব্যাংক ট্রান্সফার ও মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে পশু কেনা যাবে।
উল্লেখ্য, কয়েক বছর ধরেই অনলাইনে কোরবানির পশু বিক্রির বাজার জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। গেল বছর করোনার আগমনে অনলাইনে পশু কেনার চাহিদা অনেক বেড়ে যায়। এ বছর আবার করোনা পরিস্থিতি অবনতি হওয়ায় ঈদুল আজহায় অনলাইনে পশু বিক্রি বৃদ্ধির সম্ভাবনা দেখছে ই-ক্যাব ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
অনলাইন পশু বিক্রেতাদের সঠিকভাবে চিহ্নিত করতে শুধু ই-ক্যাব, বাংলাদেশ ডেইরি ফার্ম এসোসিয়েশন সদস্যদের পশু বিক্রির অনুমতি দেয়া হচ্ছে। এ ছাড়া অন্য কোনো অথবা অন্য কোনো অনুমোদিত কর্তৃপক্ষের সদস্যরা অনলাইনে পশু বিক্রি করতে পারবেন না। অনুমতি পাওয়া বিক্রেতাদের তথ্য ডিজিটাল হাট কর্তৃপক্ষের কাছে নথিভুক্ত থাকবে, যেখানে বিক্রেতার ট্রেড লাইসেন্সের কপি, জাতীয় পরিচয়পত্র এবং ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বর যুক্ত থাকতে হবে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (রপ্তানি) হাফিজুর রহমান জানান, অনলাইন হাটে নিবন্ধিত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান পশু বিক্রি করবে। তারা কৃষক বা খামারিদের থেকে পশু সংগ্রহ করবে। কোনো বিতর্কিত প্রতিষ্ঠানকে এখানে যুক্ত করা হবে না।
ই-ক্যাবের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওয়াহেদ জানান, যেহেতু হাট অনলাইনে হবে তাই এক্ষেত্রে ক্রেতাকে কোনো হাসিল দিতে হবে না। তবে অনলাইন বা মোবাইলের মাধ্যমে কেনাকাটা করা হলে সে খরচ ক্রেতাকে বহন করতে হবে।
অনেক সচেতন ক্রেতা সাধারণ মনে করছেন কেনা পশুর টাকা সহজে হাটে না গিয়ে বাড়িতে বসে টাকা লেন-দেন সুবিধা থাকায় অনেকটাই স্বাস্থ্য সম্মত হবে বলে জানান, ক্রেতা সাধারণ আরো জানাই, সরকারের ডিজিটাল কনসেপটি পুরোপুরি কাজে লাগাতে পারলে মহামারি করোনাতে অনেক লোক করোনা ঝুঁকি থেকে মুক্ত থাকতে পারবেন।
বিভিন্ন তথ্য সূত্রে জানা গেছে যে, অনলাইনে ইতিমধ্যে ঢাকা-চট্টগ্রাম সহ সর্বত্রই প্রায় ১লাখ ৮৪হাজার কোরবানীর গরু(পশু) গতকাল ১৩জুলাই সোমবার বিকেল পর্যন্ত বিক্রি হয়ে গেছে। আজ-কালের মধ্যে আরো ৫০-৬০হাজার পশু বিক্রির অপেক্ষায় রয়েছে বলে বিভিন্ন এগ্রো-ইচারীও ফার্মের মালিক মালিক গন মুঠোফোনে প্রতিবেদক কে জানিয়েছেন।
এদিকে চট্টগ্রামের অলি-গলিতে মৌসুমী গরু ব্যবসায়ীরা অধিক লাভের আশায় নিজ বাসাবাড়ী, খামার ওপতিত জায়গায় গরু-ছাগল, মহিষ এনে ফেইজবুক, অনলাইন, ইমো,টুইটার-ইনস্টাগ্রামে বিভিন্ন ভাবে প্রচার করে হাটে না নিয়ে স্পটেই বিক্রি করার দৃশ্য প্রায় দেখা যাচ্ছে। এতে করে মৌসুমী বিক্রিতারা লাভ হলেও আশে-পাশে যারা কোরবানীর হাট ইজারা ডেকেছেন তাদের ক্ষতি হবার আশংকা প্রকাশ করছেন একাধিক অভিজ্ঞ পুরোতন গরু-ছাগল বিক্রিতা।
আবার অনেক সচেতন জন সাধারণ জানান, যেহেতু বিশ্ব ব্যাপী ”করোনাভাইরাস” ছড়িয়ে পড়ছে সেহেতু হাটে গিয়ে কিংবা হাজার হাজার লোকের ভিড়ে গিয়ে পশু কিনতে গিয়ে করোনা সংক্রমন হবার সম্ভবনা থাকতে পারেন।তাই অনলাইনে কোরবানীর পশু কেনা-বেচা অনেকটা নিরাপদ ওসহজ প্রন্থা বর্তমানে।
Discussion about this post