সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তানজিম আহমদ সোহেল তাজ বলেছেন, ‘একটি সুন্দর সুস্থ সমাজ এবং একটি সুন্দর সুস্থ দেশ পেতে হলে প্রথমে আমার নিজেকে সুন্দর ও সুস্থ হতে হবে। শারীরিক ও মানসিকভাবে নিজেকে গড়ে তুলতে হবে। ইচ্ছা থাকলে সবকিছুই সম্ভব।
আমরা নিজ নিজ অবস্থান থেকে দেশকে কিছু দিতে চাই- এমন চিন্তা আনতে হবে। রাজনীতি করা খারাপ তা নয়। রাজনীতি করেও দেশ ও জাতিকে কিছু দেওয়া যায়। আমাদের মানসিকতার পরিবর্তন করতে হবে। রাজনীতি মানেই দুর্নীতি নয়। রাজনীতি হচ্ছে একটা মাধ্যম। কিন্তু রাজনীতির বাইরে থেকেও কিছু করা যায়।
’ গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী বঙ্গতাজ তাজউদ্দীন আহমদের একমাত্র ছেলে সোহেল তাজ। তিনি বলেন, ‘বর্তমানে সারা দুনিয়া কভিড-১৯ মহামারীতে রূপ নিয়েছে। আর এই কভিড-১৯ থেকে বাঁচার উপায় হলো শারীরিকভাবে নিজেকে ঠিক রাখা। শরীরে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা দুর্বল থাকলে কভিডে আক্রান্ত হয় বেশি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক জরিপে উঠে এসেছে, বাংলাদেশের ৬০ ভাগ মানুষ মারা যায় কোনো না কোনো অসংক্রমিত ব্যাধির কারণে।
এর মধ্যে ডায়াবেটিক, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ, ক্যান্সার অন্যতম। তবে এসব প্রতিরোধ করাও সম্ভব। এ জন্য আমাদের প্রথমে বর্তমান জীবনধারা পাল্টাতে হবে। সব ক্ষেত্রে নিজেকে মোকাবিলার জন্য নিজেকে শারীরিকভাবে ফিট হতে হবে। আমাদের শরীর হচ্ছে গাড়ির ইঞ্জিনের মতো। গাড়ির ইঞ্জিন যেমন বেশ কিছুদিন বন্ধ থাকলে আগের মতো আর চলে না, ঠিক তেমনই আমাদের শরীর। শরীরকে কাজে লাগাতে হবে। পরিশ্রম করতে হবে। তাহলেই আমাদের শরীর সুস্থ থাকবে।’
সোহেল তাজ বলেন, ‘আজ থেকে ৩০ বছর আগে দেশের ৮০-৯০ ভাগ মানুষই গ্রামে থাকত। গ্রামের জীবনধারা কী ছিল। গ্রামের জীবনধারা ছিল, কেউ করত কৃষিকাজ, আবার কেউবা সারা দিন নৌকা চালাত, কেউ কেউ কঠোর পরিশ্রম করত। মহিলারা ঢেঁকিতে করে ধান ভানত। কোনো না কোনো শারীরিক পরিশ্রম করা হতোই।
এর সঙ্গে সবচেয়ে বড় বিষয় হলো, শরীরে সূর্যের আলো লাগত। এ থেকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ডি শরীরে জমা হতো। আর এখন আধুনিক জীবনযাত্রায় এসে আমরা অলস হয়ে পড়েছি। আমরা পরিশ্রম করা ভুলে গেছি। আর এসব কারণেই শরীরে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কমে গেছে।’
তিনি বলেন, ‘আমি যা করছি তা কিছু পাওয়ার জন্য নয়। আমি বাংলাদেশের একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে দেশবাসীকে কিছু দিতে চাই। আমাদের নতুন প্রজন্মকে সঠিক পথে নিয়ে যেতে হবে। নতুন প্রজন্মকে শেখাতে হবে, কেউ কাউকে কিছু করে দেবে না। নিজেকেই নিজের ভালোটা করতে হবে। ইচ্ছা থাকলে আর চেষ্টা করলে সবই সম্ভব। অজুহাত হচ্ছে দুর্বলদের জন্য।’
সোহেল তাজ বলেন, সমাজের সাধারণ মানুষদের বিভিন্ন বিষয়ে সচেতন করতে হবে। আর এ জন্য প্রথমেই স্বাস্থ্য সচেতন হতে হবে।
তিনি বলেন, ‘আমরা সর্বক্ষণ কাজে ব্যস্ত থাকি। আর এ জন্য নিজের দিকে খেয়াল রাখার সময় পাই না। একটি সুখী সমৃদ্ধ দেশ গড়তে হলে নিজেকে সৎ, সাহসী, দেশপ্রেমিক ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক হয়ে উঠতে হবে। এ জন্য সবার আগে যুবসমাজকে এগিয়ে আসতে হবে। যুবসমাজ তথা প্রজন্ম থেকে প্রজন্মকে মাদকমুক্ত রাখতে হবে।
আর এসব বাস্তবে রূপ দিতে হলে প্রথমে নিজেকে শারীরিক ও মানসিকভাবে ফিট হতে হবে। একজন সুস্থ নাগরিক হিসেবে গড়তে হবে নিজেকে।’ তাজউদ্দীনপুত্র বলেন, ‘আমি রাজনীতি না করলেও দেশবাসীর জন্য কিছু করতে হবে এমন চিন্তা থেকে নানা বিষয়ে সচেতনতামূলক নানা কর্মকান্ড করে যাচ্ছি। আর এভাবে সবাই এগিয়ে এলে দেশের চিত্র পাল্টে যাবে।’
Discussion about this post