করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) সঙ্কটের কারণে প্রধানমন্ত্রীর উপহার পাচ্ছে কর্ণফুলীর পাঁচ ইউনিয়নের মোট ৩৬০০ পরিবার। ইতিপূর্বে কর্ণফুলীতে ২৮৫০টি পরিবারকে খাদ্য সহায়তা দেওয়া হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা (পি্আইও)।
এছাড়াও স্থানীয় সংসদ সদস্য ও ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী’র বরাদ্দ থেকে উপজেলায় পরপর দু’বার খাদ্য সহায়তা দেওয়া হয়। উপজেলাব্যাপী ইউনিয়নে ইউনিয়নে কর্মহীন ও ঘরবন্দি মানুষের কাছে এসব খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও নেতাকর্মীরা।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, করোনা ভাইরাসের এই সময়ে সরকারের ত্রাণ তহবিল হতে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সাড়ে ৩৭ টন চাল পাওয়া গেছে। পাওয়া গেছে আরও নগদ ২ লাখ ৩৬ হাজার টাকা। সাথে শিশু খাদ্যের জন্য বরাদ্দ পেয়েছেন ২৬ হাজার টাকা।
কর্ণফুলী উপজেলায় অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মো. জামিরুল ইসলাম বলেন, ‘ইতোমধ্যে এসব বরাদ্দ থেকে ২৮শ’ ৫০টি পরিবারের মাঝে ২৮.৫০ টন চাল বিতরণ করা হয়েছে। বাকি রয়েছে আরও ৯ টনের মতো চাল। নগদ অর্থ ও শিশুখাদ্যের জন্য পাওয়া বরাদ্দ থেকে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে উপকারভোগি পরিবারের তালিকা করে পৌঁছে দেয়া হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর উপহার বিতরণ সিটি এলাকায় শুরু হয়েছে। আনোয়ারা-কর্ণফুলী উপজেলায় এখনো হয়নি।’
কর্ণফুলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. নোমান হোসেন বলেন, প্রথম পর্যায়ে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পাঁচ ইউনিয়নের হতদরিদ্রদের মাঝে চাল, ডাল, তেল, আলু, পেঁয়াজ, সাবান বিতরণ করা হয়েছে। নতুন যে তালিকা করা হয়েছে এতে প্রায় ৩৬শ’ মতো পরিবার প্রধানমন্ত্রীর উপহারের প্যাকেট পাবেন। সাথে নগদ টাকাও। স্থানীয় সংসদ সদস্য ও ভূমিমন্ত্রীর বরাদ্দ ও বিতরণ করা হয়েছে। মোট কত পরিবারকে খাদ্য সহায়তা দেওয়া হল সেটা প্রকল্প কর্মকর্তার কাছে তথ্য রয়েছে। ইউএনও অারো জানান, করোনাভাইরাসের কারণে কর্মহীন হয়ে পড়া মানুষের দুর্দশা লাঘবের লক্ষ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর তহবিল হতে মানবিক সহায়তা স্বরুপ এই উপহার বিতরণ করা হচ্ছে।’
জানা যায়, প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলের এই চাল ও অর্থ জনপ্রতিনিধিরা বিতরণের কথা থাকলেও উপজেলার সকল জনপ্রতিনিধির সাথে আলোচনা করে, তালিকা সংগ্রহ করে বিতরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। যেন কোনভাবেই মিস ম্যানেজমেন্ট না হয় সেজন্য উপজেলা পরিষদ হল রুমে আলোচনা করে কাজ করছে এমনটা দাবি উপজেলা প্রশাসনের। আরো জানানো হয়, প্রতিটি ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যদের মাধ্যমে গঠিত ত্রাণ কমিটিগুলো সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের অসহায় ও কর্মহীন পরিবারের তালিকা করে উপজেলায় পাঠাচ্ছেন। সেই তালিকা ধরে শীঘ্রই উপজেলা প্রশাসন খাদ্য উপহার ও নগদ অর্থ সহায়তা প্রদান করবেন।
অন্যদিকে, কিছু কিছু উপজেলায় সিদ্ধান্ত নিয়েছে এসব খাদ্য সহায়তা বিতরণকালে বিভিন্ন দপ্তরের ১জন প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তা, ১জন ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা বা উপ-সহকারী কর্মকর্তা ও একটি বাড়ি একটি খামারের একজন মাঠকর্মীকে সাথে রেখে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যের উপস্থিতিতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর উপহার পৌঁছে দেওয়ার।
এতে করে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী পরিবারগুলো নিজ বাড়িতে অবস্থান করেই উপহার সামগ্রী পেয়ে যাবেন। উপহার সামগ্রী পৌঁছাতে সরেজমিনে গিয়ে তালিকায় কোন বিত্তশালী পরিবার পেলে তাৎক্ষণিকভাবে সেটা পরিবর্তন করা যাবে। পাশাপাশি কারো জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকলেও জন্মনিবন্ধন দেখে সহায়তা প্রদান করবেন।
সরকারিভাবে দেওয়া ওই ত্রাণসামগ্রী ও শিশুখাদ্যের প্যাকেট বা বস্তায় ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার’ লেখার নির্দেশ দিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়। নির্দেশনায় বলা হয়েছে, করোনাভাইরাস মোকাবিলায় মানবিক সহায়তা হিসেবে দেওয়া বরাদ্দকৃত ত্রাণ সামগ্রী ও শিশু খাদ্যের প্যাকেট বা বস্তার গায়ে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি ছবি থাকতে হবে এবং ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার’ লিখতে হবে। এছাড়া ‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার’ সম্বলিত গোল সিল দিতে হবে।
Discussion about this post