রাজশাহীর বাগমারায় করোনাভাইরাসে প্রথম আক্রান্ত প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর আলম (২৬) এখন করোনামুক্ত। তৃতীয় দফায় তাঁর নমুনা পরীক্ষা করে করোনাভাইরাসের অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি।
পাশাপাশি তাঁর পরিবারের অন্য সদস্যদের শরীরেও করোনাভাইরাসের উপস্থিতি মেলেনি। আর কোনো রোগী শনাক্ত না হওয়ার কারণে আপাতত বাগমারা করোনামুক্ত।
হোম কোয়ারেন্টিন মেনে চলা ও নিয়মিত গরম পানি দিয়ে গড়গড়া করার সুফল পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন করোনাবিজয়ী এই তরুণ প্রকৌশলী। সে সঙ্গে মনোবলও শক্ত ছিল তাঁর। সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে নিজের করোনা পজেটিভ থেকে নেগেটিভে আসার বর্ণনা দেন তিনি। জাহাঙ্গীর আলম উপজেলার মাড়িয়া ইউনিয়নের যাত্রাগাছি গ্রামের বাসিন্দা।
তিনি নারায়নগঞ্জের একটি পোশাক কারখানায় টেক্সাইল প্রকৌশলী হিসাবে কর্মরত ছিলেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা গোলাম রাব্বানী বলেন, প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর আলমের করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর দ্বিতীয় দফায় গত ১৮ এপ্রিল তাঁর নমুনা নেওয়া হয়।
এর আগে ১৪ এপ্রিল তাঁর সংস্পর্শে আসা পরিবারের অন্য সদস্যদের নমুনা সংগ্রহ করে রাজশাহীতে পাঠানো হয়েছিল। তাঁদের প্রতিবেদনও নেগেটিভ আসে। এরপর জাহাঙ্গীরের নমুনার ফলাফলও নেগেটিভ আসে।
তৃতীয় দফা গত শনিবার (২৫ এপ্রিল) উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে তাঁর নমুনা সংগ্রহ করে রাজশাহীর ল্যাবে পাঠানো হয়েছিল। গত মঙ্গলবার দুপুরে তাঁর নমুনা পরীক্ষার ফলাফল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পৌঁছায়। তাতেও প্রকৌশলীর ফলাফল নেগেটিভ এসেছে।
করোনাকে জয়ী প্রকৌশলী বলেন, সবারই সরকার নির্দেশিত নিয়ম মেনে ঘরে অবস্থান করা উচিত। তিনি নিজেকে করোনামুক্ত হওয়ার জন্য স্থানীয় স্বাস্থ্য বিভাগ, প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
এদিকে, রাজশাহীর দুর্গাপুর না’গঞ্জফেরত ঝালমুড়ি বিক্রেতার করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) পজিটিভ রোগী শনাক্ত হয়েছে। এই কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগী নারায়ণগঞ্জ ফেরত। তিনি সেখানে ঝাল মুড়ি বিক্রি করতেন।
তার স্থায়ী বাড়ি দুর্গাপুর উপজেলার ভাঙ্গিরপাড়া গ্রামে। গত ২৭ এপ্রিল তিনি গ্রামে আসেন। এরপর তার হোম কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করা হয়। পরে ২৮ এপ্রিল তার নমুনা সংগ্রহ করা হয়।
গতকাল বৃহস্পতিবার (৩০ এপ্রিল) তার রিপোর্টে করোনা পজিটিভ ধরা পড়ে। এ নিয়ে রাজশাহী জেলায় মোট ১৪ জন করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হলেন। এর মধ্যে একজন মারা গেছেন। তার বাড়ি রাজশাহীর বাঘা উপজেলায়। যদিও তার মৃত্যু করোনায় হয়নি বলে পরের পরীক্ষায় নিশ্চিত হয়েছেন চিকিৎসকরা। এই প্রথম রাজশাহীর দুর্গাপুরের এই ব্যক্তির নমুনায় করোনা ‘পজিটিভ’ এসেছে।
রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ নওশাদ আলী পরে সাংবাদিকদের বলেন, রাজশাহী বিভাগে আরও তিনজনের করোনা পজিটিভ পাওয়া গেছে। এর মধ্যে রাজশাহীর ল্যাবে একজনের ও বগুড়ার ল্যাবে দুজনের করোনা শনাক্ত হয়। এ নিয়ে রাজশাহী বিভাগে আক্রান্তের সংখ্যা গিয়ে দাঁড়ালো ১০৬ জনে
রাজশাহীর ল্যাবে ৮৫ জনের পরীক্ষা শেষে ৮৪ জনের নমুনা নেগেটিভ পাওয়া যায়। তবে একজনের নমুনা পজেটিভ পাওয়া যায়। ওই রোগীর বাড়ি দুর্গাপুরে। তিনি নারায়নগঞ্জ ফেরত ঝাল মুড়ি বিক্রেতা।
অন্যদিকে বগুড়ার আরেকটি-পিসিআর ল্যাবে গত ২৪ ঘণ্টায় বগুড়া, জয়পুরহাট, সিরাজগঞ্জ ও নওগাঁর ১৮৮ জনের নমুনা পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। এর মধ্যে বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার পাবনা ফেরত এক ব্যক্তি (৩৫) এবং জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার নারায়নগঞ্জ ফেরত এক ব্যক্তির (৪৫) করোনা পজিটিভ পাওয়া যায় বলেও জানান তিনি
Discussion about this post