দেশের চলমান করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে এক মাস ধরে চলা অবরুদ্ধ অবস্থা এখন কিছুটা শিথিল করার পক্ষে মত জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।তিনি বলেছেন, দেশের অর্থনীতি বাঁচাতে সীমিত আকারে শিল্প-কারখানা খুলে দেওয়া যায়। তবে তা সঠিক নিয়মে ও দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ঠিক রেখে করতে হবে।
বুধবার (২৯ এপ্রিল) ঢাকার বসুন্ধরা আন্তর্জাতিক কনভেনশন সেন্টারে কোভিড-১৯ রোগীদের চিকিৎসায় নির্মিত অস্থায়ী হাসপাতাল পরিদর্শনে গিয়ে এই মত প্রকাশ করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
জাহিদ মালেক বলেন, ‘করোনার কারণে দেশের কিছু মানুষ কর্মহীন হয়ে অনাহারে যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সেজন্য স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ঠিক রেখে সীমিত পরিসরে কিছু শিল্প কলকারখানা খুলে দেওয়া হবে।’
‘যুক্তরাষ্ট্র, ইতালি, ফ্রান্সসহ ইউরোপের বহুদেশে লকডাউন শিথিল করা হয়েছে। নিউজিল্যান্ড তো লকডাউন তুলে নিয়ে স্বাভাবিক জীবন যাত্রা শুরু করে দিয়েছে। সবকিছু ঠিক থাকলে আমরাও সামনে স্বাভাবিক জীবন ফিরে পাব’, বলেন তিনি।
করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারের হাতে এখন ২০ হাজারেরও বেশি করোনা আইসোলেশন বেড প্রস্তুত রয়েছে বলে জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘করোনায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে পর্যাপ্ত আইসোলেশন বেড, আইসিইউ সেন্টার, ভেন্টিলেটর ও অক্সিজেন সিলিন্ডার বৃদ্ধিসহ নতুনভাবে আরও ২ হাজার চিকিৎসক ও ৬ হাজার নার্স নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে।’
পাশাপাশি বেশকিছু মেডিকেল টেকনোলজিস্টও আপাতত আউট সোর্সিংয়ের মাধ্যমে নিয়োগ দেয়া হচ্ছে বলেও জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘করোনা মোকাবিলায় রাজধানীর বসুন্ধরা কনভেনশন সেন্টার, ডিএনসিসি মার্কেট ও দিয়া বাড়ির ৪টি ফ্লোরে নতুন আরও সাড়ে চার হাজার করোনা আইসোলেশন বেড প্রস্তুত হয়ে গেছে। এক সপ্তাহের মধ্যেই এই করোনা আইসোলেশন হাসপাতালগুলো উন্মুক্ত করা সম্ভব।’
করোনা আইসোলেশন বেডের সংখ্যা উল্লেখ করে জাহিদ মালেক বলেন, ‘করোনা প্রতিরোধে আরও নতুন সাড়ে চার হাজার করোনা আইসোলেশন বেড প্রস্তুত হয়ে গেছে। এক সপ্তাহের মধ্যেই এগুলো স্বাস্থ্যখাতের হাতে বুঝিয়ে দেওয়া হবে। বসুন্ধরা কনভেনশন সেন্টারে ২ হাজার বেড, ডিএনসিসি মার্কেটে ১ হাজার ৩০০ ও উত্তরার দিয়াবাড়িতে ১ হাজার ২০০ উন্নত নতুন বেড এখন প্রায় পুরোপুরি প্রস্তুত হয়ে গেছে।’
এই সপ্তাহের মধ্যেই এগুলো উদ্বোধন করে উন্মুক্ত করা যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, এগুলোর পাশাপাশি রাজধানীসহ জেলা-উপজেলায় আরও ৬০১টি প্রতিষ্ঠান করোনা আইসোলেশনে প্রস্তুত রয়েছে। সব মিলিয়ে করোনা মোকাবিলায় দেশে এখন ২০ হাজারেরও বেশি করোনা আইসোলেশন বেড প্রস্তুত হয়ে গেছে। এর থেকেও বেশি প্রয়োজন হলে তারও ব্যবস্থা সরকারের পরিকল্পনায় রয়েছে।
এ সময় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ, স্বাস্থ্য মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক ও মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) মো. হাবিবুর রহমান খান, আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যাবিষয়ক সম্পাদক ডা. রোকেয়া সুলতানা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
Discussion about this post