কারও জ্বর সর্দি কাশি গলাব্যথা হলে তাদের গণপরিবহন ব্যবহার না করার আহ্বান জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা।
তিনি বলেছেন, গণপরিবহনে চলাফেরার ক্ষেত্রে আমরা অনুরোধ করব, যাদের মধ্যে করোনাভাইরাস বা কোভিড-১৯ এর লক্ষণ বা উপসর্গ দেখা দেবে না, কিন্তু জ্বর সর্দি কাশি গলা ব্যথা হয়েছে, তারাও গণপরিবহন ব্যবহার করবেন না। এটা অনেকটা গণজমায়েতের মতোই। একান্তই প্রয়োজন ছাড়া গণপরিবহনে চলাচল সীমিত করা উচিত।মঙ্গলবার (১৬ মার্চ) রাজধানীর মহাখালীতে আইইডিসিআরের সম্মেলন কক্ষে করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রান্ত নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে ডা. ফ্লোরা এ কথা বলেন।
আইইডিসিআর পরিচালক বলেন, যারা গাড়ির চালক ও হেলপার রয়েছেন, তারাও এক্ষেত্রে সচেতন থাকুন। তাদের মধ্যে এ ধরনের উপসর্গ দেখা দিলে তারা যেন সঙ্গে সঙ্গে আইইডিসিআরের হটলাইনে যোগাযোগ করেন এবং তারা যেন গণপরিবহন ব্যবহার না করেন, না চালান। আমরা যদি গণপরিবহনের ক্ষেত্রে এই দুটি পরামর্শ মেনে চলি, তাহলে গণপরিবহন থেকে করোনাভাইরাস সংক্রমণ সীমিত হবে।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, দেশে আরও দুইজন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৬ জনের নমুনা সংগ্রহের মাধ্যমে পরীক্ষা করার পর এ দুজনের শরীরে করোনার উপস্থিতি পাওয়া গেছে। এ নিয়ে দেশে করোনায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১০ জনে। নতুন করে যে দুজন আক্রান্ত হয়েছেন, তারা পুরুষ। একজন ইতালি থেকে আসা, আরেকজন যুক্তরাষ্ট্র থেকে এসেছেন। একজন ছিলেন প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে, আরেকজন একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। তিনি একজন আক্রান্তের সংস্পর্শে থেকে সংক্রমিত হয়েছেন। দেশে এখন মোট ১৬ জন আইসোলেশনে আছেন। প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে আছেন ৪৩ জন।
এর আগে গত ৮ মার্চ দেশে প্রথমবারের মতো তিনজন করোনায় আক্রান্ত হওয়ার তথ্য জানায় আইইডিসিআর। পরে আরও দুজন করোনায় আক্রান্ত হওয়ার কথা জানায় সরকার। এদের মধ্যে তিনজন সুস্থ হয়ে যান। ১৬ মার্চ আরও তিনজন আক্রান্ত হওয়ার তথ্য জানায় আইইডিসিআর। আর মঙ্গলবারের তথ্য অনুযায়ী, দেশে করোনায় মোট ১০ জন সংক্রমিত হলেও তিনজন সুস্থ হয়ে যাওয়ায় এখন চিকিৎসাধীন আছেন ৭ জন।
করোনাভাইরাস প্রতিরোধে ১৭ মার্চ থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করেছে সরকার।
চীনের উহান শহরে প্রথম শনাক্ত হওয়া করোনাভাইরাস বিশ্বের ১৬২টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে বিশ্বব্যাপী ৭ হাজার ১৬৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। বিভিন্ন দেশে আক্রান্তের সংখ্যা ১ লাখ ৮২ হাজার ৫৫০। অপরদিকে, হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৭৯ হাজার ৮৮১ জন।
Discussion about this post