শেষ হলো অধিনায়ক মাশরাফি উপাখ্যান। আজ (৬ মার্চ) রাতে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে শেষবারের মত লাল সবুজ জার্সি গায়ে নেতৃত্ব দিলেন মাশরাফি। প্রিয় ক্রিকেটার, পেস বোলার আর অধিনায়ককে বিদায়ী শুভেচ্ছা জানাতে মাঠে ছুটে এসেছিলেন অন্তত হাজার ১৫ ক্রিকেট অনুরাগী ভক্ত-সমর্থক।
খেলার এক পর্যায়ে বৃষ্টি এসে ভিজিয়ে দিয়েছে স্টেডিয়াম ও তার চারপাশ। গ্যালারিতে থাকা ভক্তরা কাকভেজা হয়েও মাঠ ছাড়েননি। অধিনায়ক মাশরাফিকে বিদায় জানাতে, তাকে শুভেচ্ছায় সিক্ত করার সিদ্ধান্ত থেকে এক চুল সরে আসেননি কেউ।
এমন এক দিনে দল জিতেছে ১২৩ রানের বড় ব্যবধানে। দুই ওপেনার লিটন দাস আর তামিম ইকবালের রেকর্ডে মোড়ানো সাফল্যে আরও রঙিন, বর্ণিল হয়েছে মাশরাফির বিদায়ের দিনক্ষণ।
যাকে নিয়ে এত হইচই, ভক্ত-সমর্থকদের চোখের জলে বিদায় জানানো- সেই মাশরাফির অনুভূতি কী? তার কেমন লাগলো আজ? অধিনায়কত্ব ছেড়ে দেবার পর এখন কেমন লাগছে? খুব জানতে ইচ্ছে করছে তাই না?
মাশরাফি স্বীকার করেছেন, ‘হ্যাঁ অসম্ভব ভাল লাগছে। আমরা জিতেছি। বেশ ভাল খেলে অনেক সাফল্যে মোড়ানো জয়ই পেয়েছি।’ নিজের অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে মাশরাফি বলেন, ‘আসলে বিদায়টা সবসময়ই একেকজনের কাছে একেকরকম। কারও কাছে ভাল, কারও কাছে খারাপ। কারও জন্য সুখের আবার কারও জন্য কষ্টের। তবে আমার অনুভূতি মিশ্র। আমার ভাল-খারাপ উভয়ই লাগছে। অধিনায়ক হিসেবে খুব ভাল ভাবে শেষ করতে পেরেছি। সেটাও অন্যরকম ভাল লাগার।’
অধিনায়কত্ব ছাড়ার পর কেমন লাগছে? এ প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে মাশরাফি বলেন, ‘একটা কাজ তো কমে গেলো। বড় দায়িত্ব ছিল, কমে গেলো। সত্যি বলতে এটা ভালো লাগছে যে অধিনায়ক হিসেবে দলকে একতা ভালো জায়গায় রেখে শেষ করতে পারছি, আর জিতেও শেষ হয়েছে।’
শুধু পরিসংখ্যানই নয়। সব হিসেব নিকেশ আর আলোচনা-পর্যালোচনয় তিনিই বাংলাদেশের সবসময়ের সফলতম অধিনায়ক। এ সাফল্যের রহস্য জানতে চাওয়া হলে মাশরাফি অন্য কোনোরকম ব্যাখ্যায় না গিয়ে সোজা সৃষ্টিকর্তার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তার ভাষায়, ‘আসলে এ সাফল্যে আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করা ছাড়া আমি আর কিছু ভাবতে চাই না।’
অধিনায়ক মাশরাফিকে ব্যক্তি মাশরাফি কিভাবে মূল্যায়ন করেন? এ প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়েও কৌশলী মাশরাফি, ‘আসলে নিজের সম্পর্কে কী মূল্যায়ন করবো? আমি নিজের অধিনায়কত্ব নিয়ে কখনও আলাদাভাবে চিন্তা করিনি। এটা আমার মাথায় আসতো না কখনওই।’
ক্যারিয়ারের প্রায় পুরো সময় তিনি মিডিয়াবান্ধব। মিডিয়ার সাথে তার সম্পর্কটাও অন্যরকম। কিন্তু ক্যারিয়ার সায়াহ্নে কি কখনও মিডিয়াকে শত্রু মনে হয়েছে? মাশরাফির জবাব, ‘নাহ তা মনে হয়নি। মিডিয়ার কাজ বিষয়টা তুলে ধরা। ভাল হলে ভাল। খারাপ হলে খারাপ। আমার মনে হয় না মিডিয়া কোনো সময় আমার প্রতিপক্ষ হয়েছে। আমি মনে করি আমি, সাকিব, তামিম, মুশফিক আর লিটনরা- যেই আজকের পর্যায়ে এসেছি, তাদের সবার উঠে আসায় মিডিয়ার ভূমিকা আছে। অবদানও অনেক।’
অধিনায়কত্ব শেষ। এখন ক্রিকেটার হিসেবে খেলা চালিয়ে যেতে চান। নিজের বর্তমান ফর্মকে কিভাবে দেখেন? জানতে চাওয়া হলে মাশরাফি বলেন, ‘বিশ্বকাপে আমি ভাল করিনি। খুব খারাপ খেলেছি। আমার মনে হয় যদি মাঝখানে কয়েকটি উইকেট পেতাম তাহলে অত খারাপ যেত না। দলও হয়তো এক-দুইটা ম্যাচ বেশি জিততো।
Discussion about this post