চট্টগ্রাম ব্যুারোঃ চট্টগ্রাম লোহাগাড়া থানার চরম্বা ইউনিয়নের বিরোধপূর্ণ জমিতে নির্মাণাধীন বসতবাড়িতে সন্ত্রাসী হামলা ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। গত ১৩ ফেব্রæয়ারী ও ২৪ ফেব্রæয়ারী দফায় দফায় হামলা চালানোর কারনে এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে। গ্রামছাড়া হয়ে পড়েছে জমির মালিক ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা। ঘটনার বিবরনে জানা যায়, লোহাগাড়া থানার চরম্বা ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের হিন্দু পাড়ার বাসিন্দা প্রদীপ কান্তি দাশ, কৃঞ্চ দাশ শ্রীধাম দেবু কুমার মিত্র ২০১৫ ও ২০১৯ সালে ২০ (বিশ) শতাংশ জমি ক্রয় করেন।
জমির বি এস দাগ নং-৯৭৩৬, ৯৭৩৩, ৯৭৩৫ খতিয়ান নং-৫৬৩০। কিন্তু প্রিয়তোষ চৌধুরী পিতা মৃত শ্রীপতি চৌধুরী দাবি করেন অজিত কান্তি দাশ, কৃঞ্চ দাশ শ্রীধাম, দেবু কুমারের জমির মধ্যে তার অংশ রয়েছে। এর পর থেকে ভ‚মিদস্যু প্রিয়তোষ চৌধুরী বিভিন্নভাবে উক্ত জমি থেকে উৎখাতের পায়তারা চালায় ভুক্তভোগী পরিবারদের। প্রদীপ কান্তি দাশ এ বিষয়ে ২১/০২/২০২৩ তারিখে লোহাগাড়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেন। তারই ধারাবাহিকতায় পুলিশ উক্ত ঘটনার বিষয়ে তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পেয়ে বিজ্ঞ আদালতে বিবাদী প্রিয়াতোষ চৌধুরী, আশুতোষ চৌধুরী, মেঘদুত চৌধুরী বিরুদ্ধে নন-জিআর মামলা ৩৯/২৩ বিজ্ঞ আদালতে চলমান রয়েছে। ভুক্তভোগী প্রদীপ কান্তি দাশ জানান, ভুমিদস্যু হামলাকারী প্রিয়াতোষ চৌধুরী ইন্ধনে চরম্বা ইউনিয়নে ইউপি সদস্য সৈয়দ হোসেন প্রকাশ্য দিবালোকে গত ২৪ ফেব্রুয়ারী বহিরাগত ভাড়াটে ৫০-৬০ জনের সন্ত্রাসী বাহিনি নিয়ে আমার কষ্টার্জিত জীবনের শেষ সম্বল নির্মাণাধীন বাড়িতে পূর্ব পরিকল্পিত ঘটনার জের ধরে হামলা চালায়।
এ সময় বিল্ডিং এর দেয়াল ও টিনের ঘর ভাংচুর, কন্ট্রাক্টরকে মারধর, কর্মরত মিস্ত্রীদেরকে অতর্কিত হামলা চালিয়ে বাড়ির সামনের সিসি ক্যামেরা খুলে নিয়ে যায় এবং আমাদের প্রাণ নাশের হুমকি দেয়। কন্ট্রাক্টর মোঃ ইয়াছিন ও ইয়াকুব মিস্ত্রি গুরুত্ব আহত অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছে। গত ১৩ ফেব্রুয়ারী ঠিক একই ভাবে কৃঞ্জ কুমার শ্রীধাম দেবু কুমার মিত্রের উপর হামলা চালায় এ সন্ত্রাসীরা। স্থানীয় ইউপি সদস্য হয়ে কিভাবে আমাদের উপরে অন্যায়ভাবে হামলা চালায় এ বিষয়ে প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করছি। উল্লেখ্য ১৩ ফেব্রুয়ারী এ পরিকল্পিত হামলার বিষয়ে অফিসার্স ইনচার্জ লোহাগাড়া বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ করি। শুধু এ হামলা করে ক্ষান্ত হয়নি প্রিয়তোষ চৌধুরী। আমার দাগের ভিতরে ০১ (এক) গন্ডা জমির ভুয়া খতিয়ান দাড় করান প্রিয়তোষ চৌধুরী যাহার মিস মামলা নং-৮৬/২১ সহকারী কমিশনার, ভুমি লোহাগাড়া চট্টগ্রাম আবেদন করলে সহকারী কমিশনার সরেজমিনে ভ‚মি তদন্ত করে গত ১৮/০৬/২৩ ইংরেজী তারিখে উক্ত আবেদন মঞ্জুর করে প্রিয়তোষের নামজারী খতিয়ান ৪৪৩০ এর বি এস দাগ ৯৭৩৬ হইতে কর্তন করিয়া প্রদীপ কান্তি দাশের নামে সৃজন করেন। ঘটনার বিষয়ে চরম্বা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোহাম্মদের হেলালের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন উক্ত বিরোধপূর্ণ জমির বিষয়ে উভয় পক্ষের লিখিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সালিশ বৈঠকে ঐ জমিতে প্রদীপ কান্তি দাশ ও অন্যান্য বাড়িঘর নির্মাণের কাজ স্থগিত করে নিষেধাজ্ঞা করে দিই। এ বিষয়ে চেয়ারম্যানের কাছে জানতে চাইলে আপনি নিষেধাজ্ঞা জারি করতে পারেন কিনা ?
প্রতিউত্তরে চেয়ারম্যান বিষয়টি এড়িয়ে যান এবং মোবাইল বন্ধ করে দেন। উক্ত বিষয়ে প্রত্যক্ষদর্শী এলাকাবাসী চরম্বা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি শফিউল মাষ্টার জানান বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবগত। উক্ত জমির প্রকৃত মালিক প্রদীপ কান্তি দাশ, কৃঞ্চ দাশ শ্রীধাম এবং দেবু কুমার মিত্র। তাদের উপড় প্রিয়তোষ চৌধুৃরী ও ইউপি সদস্য সৈয়দ হোসেন যে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড বাড়ীঘর ভাংচুর করেছে তা অত্যন্ত অন্যায় কাজ। এছাড়াও উল্টো প্রিয়তোষ চৌধুরী ও সৈয়দ নিজেদের ভাড়াটিয়া লোকদের মারধর ও রক্তাক্ত করে থানায় মামলা করেছে। যা সম্পূর্ণরুপে ষড়যন্ত্র মূলক ও অন্যায় করেছেন। আমি এর তীব্র নিন্দা জানিয়ে অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি। তারা এলাকার শান্তি শৃঙ্খলা নষ্ট করছে।
তথ্য অনুসন্ধানে জানা যায় লোহাগাড় থানায় মামলাকৃত আসামীদের মধ্যে হিরালাল দাশগুপ্ত পেশায় আইনজীবি, রনবীর দে এ্যাডভোকেট ক্লার্ক যারা ঘটনার দিন আদালতে পেশাগত দায়িত্ব পালন করেন। এ ঘটনার পরে এলাকায় সন্ত্রাসীরা দেশীয় অস্ত্র-স্বস্ত্র নিয়ে প্রতিনিয়ত মহড়া দিচ্ছেন। এলাকায় থমতমে পরিবেশ বিরাজ করছে। বর্তমানে প্রদীপ কান্তি দাশ ও অন্যান্য ভুক্তভোগী জমির মালিকরা নিরাপত্তাহীনতায় দিনাতিপাত করছেন।
Discussion about this post