বন্দর নগরীতে শুরু হয়েছে নির্বাচনি আমেজ ,নির্বাচনে সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থী কে হচ্ছেন, এ নিয়ে শুরু হয়েছে আলোচনা। ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের অনেকেই মেয়র পদে প্রার্থীতার জন্য মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন। কিন্তু সবার চেয়ে এগিয়ে বর্তমান মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে দুই হাজার ৫৫০ কোটি টাকার মেগা উন্নয়নসহ চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক অবস্থানকে শক্তিশালী করার জন্য আওয়ামী লীগ সভাপতির আস্থাভাজন হয়ে উঠেছেন আ জ ম নাছির উদ্দিন।
১৯৯৪ সালে প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনেরটানা ১৭ বছর মেয়র হিসেব দায়িত্ব পালন করেন। ২০১০ সালে বিএনপির এম মনজুর আলমের কাছে তিনি হেরে যান। পাঁচ বছর আওয়ামী লীগের হাতছাড়া থাকার পর আওয়ামী লীগ উচ্চ পর্যায়ের নীতি নির্ধারকরা ২০১৫ সালে সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আ জ ম নাছিরের হাতে নৌকার বৈঠা তুলে দেন। নগরীর ভোটারা আ জ ম নাছির উদ্দীনের প্রতি আস্থা রাখেন এবং ফের চসিক নির্বাচনে আওয়ামী লীগের কাছে ফিরিয়ে আনেন আ জ ম নাছির উদ্দীন।
তবে প্রার্থীতার ব্যপারে যতই আলোচনা হোক না কেন। শেষ সমাধান আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতেই— এ বিষয়ে একমত সবাই।
এই মুহূর্তে মেয়র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পাওয়ার পাল্লা ভারি আছে আ জ ম নাছির উদ্দীনের। এছাড়া মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল স্থানীয় সরকারের কর্মকাণ্ডে অনিচ্ছা থাকায় আ জ ম নাছিরই একক যোগ্য প্রার্থী মনে করছে নগরবাসী। দলীয় কর্মকাণ্ডে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগকে সবার মতামতের ভিত্তিতে পরিচালনাসহ নানা ধরনের উদ্যোগে কারণে আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারক মহলে বারবার প্রশংসিত হয়েছেন তিনি।
সিভয়েসের সাথে আলাপচারিতায় নগর পিতা আ জ ম নাছির উদ্দিন বলেন ,আমি জনগণের পাশে থেকে কাজ করার চেষ্টা করছি। নগর উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ শুরু করেছি। চট্টগ্রামকে সত্যিকারের বাণিজ্যিক রাজধানী হিসেবে গড়ে তুলতে বিভিন্ন প্রকল্প হাতে নিয়েছি। এসব প্রকল্প পুরোপুরি চালু হলে পাল্টে যাবে চট্টগ্রামের অর্থনৈতিক চিত্র। চসিকের সেবাসংস্থা সমূহ তাদের নীতিমালার নগরবাসীকে সেবা দিয়ে যাচ্ছে। আমি নগরবাসীর জন্য ডোর টু ডোর কর্মসূচী থেকে শুরু করে চসিকের স্বাস্থ্য খাতে নগরবাসীর জন্য বিনামুল্যে চিকিৎসা সেবা চালু করেছি। প্রায় দুই হাজার ৫শত কোটি টাকার উন্নয়নের পাশাপাশি ,আরো দুই হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন চলমান আছে।
‘আমি মেয়র হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার আগের ২৫ বছরে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনে উন্নয়ন কাজ হয়েছে দুই হাজার ৫৫০ কোটি টাকার। আমি মেয়র হওয়ার পর গত সাড়ে চার বছরে হয়েছে তিন হাজার কোটি টাকার কাজ। অনুমোদন হয়েছে আরও আড়াই হাজার কোটি টাকার প্রকল্প। এছাড়া ছয় হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প জমা আছে। মোট কথা, আমি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনকে একটি টেকসই ভিত্তির ওপর দাঁড় করিয়েছি।’
রাজনীতি প্রসঙ্গে আ জ ম নাছির বলেন, ‘অতীতে আমাকে অনেকে ভুল বুঝতেন। কিন্তু গত চার বছরে আমাকে নিয়ে শীর্ষ পর্যায়ের অনেকের ভুল ভেঙেছে। আমার উদারতা, সবাইকে নিয়ে চলার মানসিকতাটুকু তারা এখন অনুধাবন করতে পারছেন। সেজন্য দূরত্ব এখন নেই বললেই চলে। আর চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগকে আমরা সবার মতামতের ভিত্তিতে পরিচালনা করছি। এখানে সবাই বক্তব্য রাখতে পারেন, নিজস্ব মতামত দিতে পারেন। একক কিছু নয়, যৌথভাবে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়ে কর্মকাণ্ড করছি। এর ফলে মহানগর আওয়ামী লীগেও কেউ যদি অতীতে আমাকে ভুল বুঝতেন, তারাও এখন সেটা বুঝতে পারছেন।’
সূত্রমতে জানা যায়, গত অক্টোবরে কেন্দ্রীয় সম্মেলনের পর আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায় থেকে মহিবুল হাসান চৌধুরীকে চট্টগ্রামের রাজনীতিতে সক্রিয় হয়ে মেয়র নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। তবে তিনি সেই প্রস্তাবে রাজি হননি বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমকে জানান এবং মনোনয়ন সংগ্রহ না করাই বিষয়টি পরিস্কার।
উল্লেখ্য, মেয়র পদে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন চসিকের বর্তমান মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন, মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আলতাফ হোসেন চৌধুরী বাচ্চু ও আওয়ামী লীগ নেতা মো. ইউনুছ, আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন, সাবেক মন্ত্রী ও মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি নুরুল ইসলাম বিএসসি, নুরুল ইসলাম বিএসসির ছেলে শিল্পপতি মুজিবুর রহমান, মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. রেজাউল করিম চৌধুরী ও কোষাধ্যক্ষ আবদুচ ছালাম।
Discussion about this post