যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের মধ্যকার ব্যবসা বাণিজ্য সম্প্রসারণের লক্ষ্যে ইউএস বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (ইউএসবিসিসিআই)এর উদ্যেগে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে ১০ জন নারীকে উদ্যোক্তার পুরস্কার প্রদান করা হয়েছে।
প্রথমবারের মতো ইএন্ডএফ কমার্স বিজনেস সামিট ও নারী উদ্যোক্তা পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠান স্থানীয় লাগোর্ডিয়া ম্যারিয়ট হোটেলে অনুষ্ঠিত হয়।
শেহলা ইফতেখার ও চেম্বারের পরিচালক শেখ ফরহাদের যৌথ সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন আয়োজক সংগঠনের প্রধান নির্বাহী ও প্রেসিডেন্ট লিটন আহমেদ। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন নিউইয়র্ক স্টেট সিনেটর লুইস আর. সেপুলভেদা, নিউ ইয়র্ক স্টেট এসেম্বলিম্যান ডেভিড আই. ওয়েপ্রিন, নিউ ইয়র্ক স্টেট এসেম্বলিওমেন জেনিফার রাজকুমার, নিউ ইয়র্ক স্টেট এসেম্বলিওমেন মাইকেল সি. সোলেজ, মোফাজ্জল হোসেন ডেমোক্রেট ডিস্টিক লিডার, ৩৮ এসেম্বলি ডিস্টিক এবং বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের ওয়াশিংটন ডি.সি দূতাবাসের ইকনোমিক মিনিস্টার মেহদী হাসান ও নিউ ইয়র্কের ভারপ্রাপ্ত কনসাল জেনারেল এস এম নাজমুল হাসান।
নারীর ক্ষমতায়নের প্রতি সমর্থন জানিয়ে প্রতিবছর ১৯ নভেম্বরকে নারী উদ্যেক্তা দিবস বা উইম্যান এন্টারপ্রেনিউরশিপ ডে হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে জাতিসংঘ। এরই অংশ হিসেবে ২০ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী ১০ নারী উদ্যেক্তাকে সম্মাননা জানায় ইউএসবিসিসিআই।
সম্মাননাপ্রাপ্ত নারীরা হলেন- মুশরাথ শাহীন, নওশীন নাহরীন মৌ, আমিনা রহমান, সুমনা রিমি, শেহলা ইফতেখার, লাকি খান, লাকি খান, এলিজাবেথ বক্স ও রাজিয়া হ্যাপী।
স্বাগত বক্তব্যে ইউএস বাংলাদেশ চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ড্রাস্ট্রি (ইউএসবিসিসিআই) প্রেসিডেন্ট ও প্রধান নির্বাহী মো. লিটন আহমেদ বলেন,
আমরা সবাই এখানে জড়ো হয়েছি এই অঞ্চলে এবং এর বাইরেও নারী উদ্যোক্তা দিবসের অর্জন উদযাপন করতে। আজকের সামিটে নতুন উদ্যোক্তারা তাদের কর্মজীবন এবং ব্যক্তিগত লক্ষ্য অর্জনে কিভাবে কাজ করেছে তা বিভিন্ন শ্রোতাদের জন্য একটি ইন্টারেক্টিভ পদ্ধতিতে প্রশিক্ষণ এবং তথ্য গ্রহণ করার জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম প্রদান করে। আজকের ইভেন্টে অংশগ্রহণকারীদের নানান পেশাদারদের সাথে পরিচিত হবার সুযোগ করে দিয়েছে এবং তাদের সফল হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় বিষয়গুলির নিয়ে আলোচনা করারও সুযোগ পেয়েছে। এই সামিট নতুন নারী উদ্যোক্তাদের তাদের পরবর্তী পরামর্শদাতা, বন্ধু এবং ক্লায়েন্টদের সাথে সংযুক্ত করবে। বিশ্বের শতাধিক দেশের সঙ্গে এ বছরের ২০ নভেম্বর নিউ ইয়র্কে ইউএস বাংলাদেশ চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ড্রাস্ট্রির(ইউএসবিসিসিআই) উদ্যোগে উদযাপন করা হয় ‘নারী উদ্যোক্তা দিবস-২০২১’।
বর্তমানে অনলাইনভিত্তিক উদ্যোগে নারী উদ্যোক্তাদের উপস্থিতি তুলনামূলক বেশি লক্ষ করা যায়। কারণ সামাজিক ও পারিবারিক দায়বদ্ধতা ও প্রতিবন্ধকতা বিশেষ বাধা হয়ে দাঁড়ায় না বলে অনলাইন ভিত্তক উদ্যোগে নারীরা খুব স্বচ্ছন্দেই পদচারণা করতে পারে। একটি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে শিল্পোদ্যোগ এবং শিল্পোদ্যোক্তার ভূমিকা অনস্বীকার্য। শিল্পোদ্যোগই দেশের সকল বস্তুগত ও অবস্তুগত সম্পদ সঠিক এবং সর্বোচ্চ মাত্রায় ব্যবহারের মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক উন্নতিকে ত্বরান্বিত করে।
ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের ‘গ্লোবাল জেন্ডার গ্যাপ রিপোর্ট ২০২০’ অনুযায়ী, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ নারী সমতার ক্ষেত্রে বিভিন্ন অবস্থানে রয়েছে। এমনকি উন্নত দেশেও নারী সমতা পুরোপুরি অর্জিত হয়নি। তাদের রিপোর্ট অনুযায়ী, ১৫৩টি দেশের মধ্যে একটি দেশও পুরোপুরি নারী–পুরুষের সমতা অর্জন করতে পারেনি। সামগ্রিকভাবে গড়ে সারা পৃথিবীর ১৫৩টি দেশে জেন্ডার গ্যাপ পূরণ হয়েছে ৬৯ শতাংশ। সবচেয়ে এগিয়ে আছে আইসল্যান্ড, যে দেশটি নারী–পুরুষের ফারাক ৮৮ শতাংশ পূরণ করতে পেরেছে। প্রথম পাঁচটি দেশের মধ্যে চারটিই নরডিক। এর মধ্যে রয়েছে আইসল্যান্ড (১ম), নরওয়ে (২য়), ফিনল্যান্ড (৩য়) ও সুইডেন (৪র্থ)। পাঁচ নম্বরে রয়েছে লাতিন আমেরিকার দেশ নিকারাগুয়া। এ জেন্ডার গ্যাপ সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ৫০তম। দক্ষিণ এশিয়ার অন্য দেশগুলোর মধ্যে নেপাল ১০১তম, শ্রীলংকা ১০২তম, ভারত ১১২তম, ভুটান ১৩১তম ও পাকিস্তান ১৫১তম। অর্থাৎ এখানে বাংলাদেশ সবার চেয়ে এগিয়ে আছে। শুধু দক্ষিণ এশিয়াতেই নয়, এমনকি সিঙ্গাপুর (৫৪তম), চীন (১০৬তম), জাপান (১২১তম) এবং অন্য অনেক দেশের চেয়েও বাংলাদেশ এগিয়ে রয়েছে; যা সত্যিই বিস্ময়কর ও প্রশংসনীয়।
নিউ ইয়র্কের ভারপ্রাপ্ত কনসাল জেনারেল এসএম নাজমুল হাসান অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন ইউএসবিসিসিআই-এর প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ আহসান, প্রফেসর হেনা সিদ্দিকী, প্রতিষ্ঠাতা ও বোর্ড পরিচালক(এআইইইউএসএ), আলিফ লায়লা নাবিলা সহকারী ভাইস-প্রেসিডেন্ট (ব্যাঙ্ক অফ আমেরিকা), মনিকা রায় চৌধুরী-প্রেসিডেন্ট, বাংলাদেশ আমেরিকান উইমেন ফর প্রগ্রেস, ডাঃ সিমা কারেতনয়া রাষ্ট্রদূত, জাতিসংঘ, ডাঃ সিমা কারেতনয়া-রাষ্ট্রদূত, জাতিসংঘ, মেরি জোবায়েদা-রিপ্রেজন্টেটিভ জেসিকা রামুস নিউইয়র্ক স্টেট সিনেটর, যুক্তরাষ্ট্রে সোনালী এক্সচেঞ্জের প্রধান কার্যনির্বাহী দেবশ্রী মিত্র, মোহাম্মদ জাহিদ করিম, এনওয়াইপিডি পুলিশ কর্মকর্তা, শেখ গালিব রহমান প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ট্রান্সফোটেক একাডেমি, দীলিপ কুমার থাঙ্কাপ্পন প্রেসিডেন্ট ওয়ার্ল্ড ইয়োগা কমিউনিটি এবং সমাপনী বক্তব্য রাখেন জনাব আব্দুল কাদের মিয়া, সহ-সভাপতি ইউএস বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডা
Discussion about this post