বিশেষ প্রতিবেদনঃ২৬সেপ্টেম্বর
প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে টিকার আওতায় আনতে ফের শুরু হচ্ছে গণটিকাদান কর্মযজ্ঞ। যাতে প্রত্যন্ত অঞ্চলের সাধারণ মানুষদের টিকার আওতায় আনতে কর্মসূচি হাতে নিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ। চট্টগ্রামে প্রাথমিক পর্যায়ে একদিনের কর্মযজ্ঞ হাতে নেয়া হয়েছে। বাস্তবায়নে পরিকল্পনাও গ্রহণ করেছে সংশ্লিষ্ট বিভাগ। ইতোমধ্যে তৃণমূল পর্যায়ে টিকা প্রদানে চট্টগ্রামের জন্য আরও ৪ লাখ ৭৫ হাজার ডোজ ভ্যাকসিন পাওয়া গেছে।
গতকাল শনিবার সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে এসব ভ্যাকসিন চট্টগ্রামে এসে পৌঁছায়। এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি। এদিকে, গতবারের মতো ঢালাওভাবে ভ্যাকসিন প্রদান করা না হলেও একদিনের কর্মসূচিতে স্পট রেজিস্ট্রেশনসহ জ্যেষ্ঠতা ও অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকা দেয়ার পরিকল্পনা আছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা।
চট্টগ্রামের সর্বমোট ২০০ ইউনিয়ন ও ৬ পৌরসভার স্থায়ী অস্থায়ী প্রায় দুইশ’ কেন্দ্রে টিকা দেয়া হবে। পাশাপাশি উপজেলা পর্যায়ে চলা নিয়মিত কেন্দ্রগুলোতেও এ কর্মযজ্ঞ চলমান থাকবে। এছাড়া সিটি কর্পোরেশন এলাকাগুলোতেও আগের মতো গণটিকা প্রদান করা হবে। তবে উপজেলা ও গ্রামে পূর্বের গণটিকাদানের চেয়ে দ্বিগুণ বেশি টিকা দেয়ার চিন্তাভাবনা রয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগের।
আগামী ২৭ থেকে ২৯ সেপ্টেম্বর তিনদিনের জন্য গণহারে টিকাদানের পরিকল্পনা নির্ধারণ করা হয়। তবে গতকাল শনিবার স্বাস্থ্য বিভাগের উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত বাতিল হয়। যাতে শুধুমাত্রা ২৮ সেপ্টেম্বর একদিনের জন্য গণটিকাদান কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়। তবে এ একদিনের কর্মসূচির পর প্রতি সপ্তাহে দুইদিন টিকা প্রদানের বিষয়ে সম্প্রতি নির্দেশনা দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলাপে জানা যায়, কর্মসূচি শুরুর পর থেকে ধাপে ধাপে ইউনিয়ন পর্যায়ের অস্থায়ী কেন্দ্রগুলোতে নিয়মিত টিকা প্রদান করা হবে।
চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, ‘পূর্বে থেকে তিনদিনের গণটিকাদান কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়েছিল। তবে সেটি বাতিল হয়েছে, এখন শুধুমাত্র আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর একদিনের জন্য টিকা দেয়া হবে। এতে আগের চেয়ে দ্বিগুণ টিকা দেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। ইতোমধ্যে আমরা ৪ লাখ ৭৫ হাজার ডোজ ভ্যাকসিন পেয়েছি। তা দ্রুত সময়ের মধ্যে কেন্দ্রে কেন্দ্রে পাঠানো হবে। গণটিকার বিষয়ে আরও কয়েকদফা বৈঠকে আলোচনাও আছে বলে জানিয়েছেন তিনি।’
এর আগে গত ২১ সেপ্টেম্বর কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন ব্যবস্থাপনা ট্রাস্কফোর্স কমিটির সদস্য সচিব ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক ও লাইন ডাইরেক্টর (এমএনসিএন্ড এইচ) ডা. মো. শামসুল হক স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে সাত নির্দেশনা দেয়া হয়। যাতে টিকাদান কেন্দ্র ও বুথ বৃদ্ধি, ইউনিয়ন পর্যায়ে সপ্তাহে দুইদিন টিকাদান, অনিবন্ধিতদের স্পট রেজিস্ট্রেশন, স্বাস্থ্য সহকারী ও পরিবার কল্যাণ সহকারীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে টিকা রেজিস্টেশনের সহায়তা, টিকা প্রদানের সময় বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন নির্দেশনা দেয়া হয়।
মাঠপর্যায়ের স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, এ বিষয়ে তাদের কাজ চলমান রয়েছে। তবে জনবল সংকটের কারণে সেটি বাস্তবায়নে বাধাও হতে পারে বলে ধারণা কারও কারও।
অন্যদিকে, দেরিতে হলেও স্বাস্থ্য বিভাগের এমন সিদ্ধান্ত সংক্রমণ রোধে কার্যকরী ভূমিকা রাখবে বলে মত সংশ্লিষ্টদের। তবে চিঠির মধ্যেই এ সিদ্ধান্ত না থেকে দ্রুত বাস্তবায়নের তাগিদ বিশেষজ্ঞদের।
Discussion about this post