কক্সবাজার প্রতিনিধিঃ২৩সেপ্টেম্বর
আগামী ২০২২ সালের ১৬ ডিসেম্বরের দিকে দোহাজারী থেকে কক্সবাজার রেললাইন চালু করা হবে বলে জানিয়েছেন রেলপথ মন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন। গতকাল ২২ সেপ্টেম্বর বুধবার দুপুরে দোহাজারী হতে রামু হয়ে কক্সবাজার এবং রামু হতে মিয়ানমারের নিকট গুনধুম পর্যন্ত সিঙ্গেল লাইন ডুয়েল গেজ ট্র্যাক নির্মাণ প্রকল্পের অগ্রগতি পরিদর্শনের সময় কক্সবাজার শহরের কাছে আইকনিক স্টেশন বিল্ডিং নির্মাণস্থানে উপস্থিত হয়ে রেলমন্ত্রী সাংবাদিকদের একথা বলেন।
তিনি বলেন, কক্সবাজার রেললাইন চালুর অপেক্ষায় সারা দেশবাসী রয়েছে। ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত এটির নির্ধারিত মেয়াদ ধরা আছে। করোনাকালীন কাজ করতে সমস্যা এবং নির্দিষ্ট সময়ে সরকারি কিছু স্থাপনার জমি পেতে সমস্যার কারণে কাজ বিলম্বিত হয়। কাজেই ছয় মাস পিছিয়ে আগামী বছরের ডিসেম্বরে এটি উদ্বোধনের জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
রেলপথমন্ত্রী উল্লেখ করেন, কক্সবাজার রেললাইন চালু হলে পর্যটকদের ব্যাপকহারে আগমন ঘটবে। এ অঞ্চলের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হবে। আইকনিক স্টেশনের বিভিন্ন সুবিধার কথা মন্ত্রী এ সময় তুলে ধরে বলেন, এখানে যাত্রীরা এসে থাকতে পারবে, এমনকি তাদের মালামাল রাখার জন্য ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
এই প্রকল্পে এখনো কিছু মামলা আছে, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মামলাগুলো পরিবারকেন্দ্রিক, তবে প্রকল্পের স্বার্থে ব্যক্তিগণ তাদের জমি স্বতঃস্ফূর্তভাবে দিয়ে দিয়েছেন। জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে সবকিছু এখন নিষ্পত্তি হচ্ছে। এটি ট্রান্স এশিয়ান রেল লাইনের একটি অংশ।
চকরিয়া থেকে মাতারবাড়ি পর্যন্ত ১৮ কিলোমিটার নতুন রেললাইন নির্মিত হবে বলে মন্ত্রী জানান। কক্সবাজারে বহুমুখী উন্নয়ন কার্যক্রম চলমান আছে এবং এখানকার অর্থনৈতিক সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন হচ্ছে বলে মন্ত্রী উল্লেখ করেন।
রেলপথ মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত একটি আত্মনির্ভরশীল দেশ গড়ার লক্ষ্যে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী কাজ করে যাচ্ছেন। সকল সেক্টরে উন্নয়ন হচ্ছে। ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত, সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সারাদেশে অনেক মেগা প্রকল্পের কাজ চলমান আছে। দোহাজারী থেকে কক্সবাজার রেললাইন নির্মাণ দশটি মেগা প্রকল্পের মধ্যে একটি।
পরবর্তীতে, রেলপথমন্ত্রী নির্মাণাধীন রেললাইন পরিদর্শন করেন। ইতোমধ্যে প্রায় ৬ কিলোমিটার রেললাইন বসানো হয়েছে।
উল্লেখ্য যে, এডিবির অর্থায়নে প্রথম পর্যায়ে দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটার নতুন সিঙ্গেল লাইন ডুয়েল গেজ রেললাইন নির্মিত হচ্ছে । বর্তমানে এই প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ৬২ শতাংশ। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে কক্সবাজারকে রেলওয়ে নেটওয়ার্কের আওতায় আনাসহ পর্যটকরা সাশ্রয়ী আরামদায়ক ও নিরাপদ ভ্রমণের সুযোগ পাবেন।
এছাড়া, সহজে ও কম খরচে মাছ, লবণ, রাবারের কাঁচামাল এবং বনজ ও কৃষিজ দ্রব্যাদি পরিবহন করা সম্ভব হবে। পরিদর্শনের সময় কক্সবাজার ৩ আসনের সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল, সংশ্লিষ্ট প্রকল্প পরিচালক মফিজুর রহমান, বাংলাদেশ রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক জাহাঙ্গীর হোসেনসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
Discussion about this post