বিশেষ প্রতিবেদকঃ১৮সেপ্টেম্বর
বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম বলেছেন, ‘বর্তমান সরকার ক্ষমতাকে ফ্যাসিবাদী কায়দায় দীর্ঘায়িত করতে গিয়ে দেশ, রাজনীতি ও গণতন্ত্রকে সংকটে ফেলে দিয়েছে। দেশবাসী এখন ভয়াবহ দুর্দিন অতিক্রম করছে। রাষ্ট্রের জনগণের মালিকানা কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’
১৭ সেপ্টেম্বর,শুক্রবার বিকালে নগরীর সিমেন্ট ক্রসিং কিন্ডার গার্ডেন স্কুলে ইপিজেড থানা বিএনপির মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মাহবুবের রহমান এসব কথা বলেন।
বিএনপির এই কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, অবাধ, নিরপেক্ষ ভোটের মাধ্যমে স্বাধীনভাবে জনপ্রতিনিধি নির্বাচনের পথ এই সরকার রুদ্ধ করে দিয়েছে। নির্বাচনী বিধি ব্যবস্থা ধ্বংস করে দিয়েছে। বর্তমান সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠুভাবে সম্ভব নয়। তাই নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশনের তত্ত্বাবধানে নির্বাচন আজ গণদাবিতে পরিণত হয়েছে। এজন্য তারেক রহমানের নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ হয়ে গণআন্দোলনের মধ্যদিয়ে এই সরকারকে পরাজিত করতে হবে।
মাহবুবের রহমান শামীম বলেন, সরকার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অপব্যবহার করে বিএনপির সাংগঠনিক কার্যক্রমেও প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। আমাদের খোলা মাঠে সভা-সমাবেশের সুযোগ দিচ্ছে না। দলীয় কার্যালয়ের সমাবেশেও তারা মাইক কেড়ে নিচ্ছে। কোথাও সভা-সমাবেশ করলে পুলিশ দিয়ে নেতাকর্মীদের ভিডিও করে তাদের নামে মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে। এটা গণতন্ত্রের চর্চা নয়। আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারের কাছে গণতন্ত্র, মানুষের মৌলিক মানবাধিকার ও আইনের শাসনের কোনো মূল্য নেই।
‘করোনাকালে স্বাস্থ্যখাতে দুর্নীতি ও করোনা মোকাবেলায় ব্যর্থতার দিকে তাদের নজর নেই। তারা আছে বিএনপির কর্মসূচির ওপর হামলা ও নেতাকর্মীদেরকে গ্রেপ্তার আর নির্যাতনের দিকে। তারা আজকে কোন ইস্যু না পেয়ে স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমানকে নিয়ে কল্পকাহিনী রটাচ্ছে। বেগম খালেদা জিয়াকে গৃহবন্দি করে রেখেছে। এসবের অবসান হবেই ইনশাল্লাহ।’ বলেন মাহবুব।
চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘করোনা নিয়ে কে কী সমালোচনা করলো, আমি তার পরোয়া করি না’ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্যের সমালোচনা করে বলেন, স্বাস্থ্যমন্ত্রী পরোয়া করবে কেন? তার তো ভোটের দরকার হয় না। তার তো নির্বাচনের দরকার হয় না। তিনি কীভাবে মন্ত্রী হয়েছেন তা জনগণ জানে। তাদের তো শুধু প্রধানমন্ত্রী ভালো থাকলেই সব কিছুই ঠিক থাকে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী থাকা অবস্থায় ২৭ হাজার লোক মারা গেছে। করোনায় মারা যাওয়া এই ২৭ হাজার লোক স্বাস্থমন্ত্রীর উপহার। তাদের মাঝে কোনো কর্তব্যবোধ ও দায়িত্বশীলতা নেই।’
তৃণমূল পর্যায়ে নেতাকর্মীদের সংগঠিত করে সংগঠনকে শক্তিশালী করার মাধ্যমে তারেক রহমানের নেতৃত্বে আগামী দিনের আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত থাকার জন্য নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান ডা. শাহাদাত।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর বলেন, ‘বিএনপির ইতিহাস হচ্ছে স্বাধীনতার ইতিহাস, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার ইতিহাস। বিএনপি স্বাধীনতার ঘোষক সেক্টর কমান্ডার ও বীর উত্তম জিয়াউর রহমানের দল। ১৯৭১ সালে শহীদ জিয়ার স্বাধীনতার ঘোষণায় জনগণকে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে উদ্বুদ্ধ করেছিল। তিনি মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশ একটি সমৃদ্ধ ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্বের বুকে মাথা উচু করে পথচলা শুরু করেছিল। আওয়ামী লীগ জিয়াউর রহমানকে নিয়ে যে সমালোচনা আর কুৎসা রটাচ্ছে তা দেশের বিশ্বাস করে না। বরং আওয়ামী লীগ ধিকৃত ও ইতিহাস বিকৃতকারী দল হিসেবে পরিচিত হচ্ছে।’
ইপিজেড থানা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি মোজাদ বারেকের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক রোকন উদ্দীন মাহমুদের পরিচালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ন আহবায়ক এমএ আজিজ, যুগ্ম আহ্বায়ক মো. মিয়া ভোলা, এসএম সাইফুল আলম, ইয়াছিন চৌধুরী লিটন, মো. শাহ আলম।
আরও বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আনোয়ার হোসেন লিপু, মো. কামরুল ইসলাম, নগর বিএনপি নেতা মো. নুরুজ্জামান, মো. ইদ্রিস আলী, ওয়ার্ড় বিএনপির সভাপতি মো. আশরাফ উদ্দীন, সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান, থানা বিএনপির সহ সভাপতি মো. শাহজান, আবদুল মান্নান, সি. যুগ্ম সম্পাদক জাবেদ আনসারী, যুগ্ম সম্পাদক মো. আলী, মো. রিয়াজ, মো. সাগের, সাংগঠনিক সম্পাদক ইমরান খান, নুর উদ্দীন মুন্না, নগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সি. যুগ্ম সম্পাদক আলী মর্তুজা খান, ওয়ার্ড় বিএনপির সি. সহ সভাপতি আইয়ুব খান, সহ সভাপতি জসিম উদ্দীন, মো. শরিফ, সি. যুগ্ম সম্পাদক মিজানুর রহমান পারুল, যুগ্ম সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আলমগীর, মীর ইফতেখার, প্রচার সম্পাদক মাহফুজুর রহমান বাদশা প্রমুখ।
Discussion about this post