হঠাৎ করে পুরোপুরি লকডাউন শিথিল কোন বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি হতে পারে নাঃখোরশেদ আলম সুজন

বিশেষ প্রতিবেদনঃ১১আগস্ট
হঠাৎ করে পুরোপুরি লকডাউন শিথিল কোন বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি হতে পারে না বলে মত প্রকাশ করেছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক প্রশাসক এবং চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন। গতকাল মঙ্গলবার (১০ আগস্ট ২০২১ইং) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে তিনি এ মত প্রকাশ করেন।
এসময় তিনি বলেন করোনা সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর থেকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বর্তমান সরকারের সঠিক এবং কার্যকরী উদ্যোগের ফলে বাংলাদেশ দুর্যোগ কাটিয়ে উঠতে শুরু করেছে। করোনার চিকিৎসা, টিকা প্রদান, প্রণোদনা, রেমিটেন্স আয় বৃদ্ধি, জীবন ও জীবিকা সমুন্নত রাখার মাধ্যমে সরকার একদিকে দেশের অর্থনীতিকে সচল রেখেছে অন্যদিকে দেশকে করোনার হাত থেকে রক্ষা করতে প্রাণপন চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু হঠাৎ করে লকডাউন পুরোপুরি শিথিল করা হলে এর পরিস্থিতি কি দাড়াবে তাও আমাদের ভেবে দেখতে হবে। লকডাউন শিথিল করার ফলে আমেরিকা, জাপান, জার্মান, চীন এবং ভিয়েতনাম যে কঠিন মাসুল দিচ্ছে তাদের কাছ থেকে যদি আমরা শিক্ষা নিতে না পারি তাহলে আমাদেরকেও এজন্য খারাপ পরিস্থিতির শিকার হতে হবে। এক্ষেত্রে সংক্রমণ এবং মৃত্যু দুইটাই আশংকাজনক হারে বাড়তে পারে।
যদিও লকডাউন কোন স্থায়ী সমাধান না। দেশের জনগনকে পুরোপুরি ভ্যাকসিনেশন না করা এবং যতদিন সংক্রমণের মাত্রা উর্দ্ধগতিতে থাকবে ততদিন মাস্ক পরা, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা ও সামাজিক সংঘবদ্ধতা থেকে দূরে থাকি তাহলে করোনা সংক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে পারি। তিনি আরো বলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যেভাবে সাফল্যের সাথে করোনা মোকাবেলা করে দেশকে উন্নয়নের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন সেটাকে পরিপূর্ণ সফলতা এবং বাস্তবায়নের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যেতে হলে মাঠপর্যায়ের সকলকে আন্তরিক হতে হবে। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখজনকভাবে দেখা যাচ্ছে যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সফল উদ্যোগগুলোকে মাঠ পর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী তাদের স্বার্থ হাসিলের হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছে। সরকারের বিনামূল্যের টিকাকে তারা জনগনের কাছে বিক্রয় করছে যা প্রতারণার সামিল।
সাধারণ মানুষ লাইন ধরে টিকা নিচ্ছে অন্যদিকে অকশ্রেণীর মানুষ ঘরে বসে টিকা গ্রহণ করছে যা সরকারের গণটিকা কার্যক্রমকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। ভ্যাকসিন বাণিজ্যের সাথে জড়িত অপরাধীদের কঠোর শাস্তির আওতায় আনার জোর দাবী জানান তিনি। তিনি বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন আমরা দেখতে পেয়েছি দুইডোজ টিকা নেওয়ার পরও অনেকে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন, অনেকে মারা গিয়েছেন।
কিন্তু বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে দুইডোজ টিকা গ্রহীতারা করোনা সংক্রমণ থেকে অনেকাংশেই মুক্ত। তাহলে দুইডোজ টিকা নেওয়ার পরও যারা আক্রান্ত হয়েছেন তারা কি পরিপূর্ণ ডোজ টিকা নেননি? অথবা তারা কি বাহির থেকে টিকা গ্রহণ করেছেন? তাই দুইডোজ টিকা গ্রহণ করার পরও যারা করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন তারা কোথা থেকে টিকা গ্রহণ করেছেন তার তথ্য সংগ্রহ এবং উচ্চতর কমিটির মাধ্যমে তদন্ত করার জন্য স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি অনুরোধ জানান তিনি।
তিনি বলেন সরকার দেশের সকল নাগরিককে টিকার আওতায় আনার জন্য হাজার কোটি টাকা খরচ করছে কিন্তু সরকারের এই শুভ উদ্যোগ বাস্তবায়নে যারা বাঁধা সৃষ্টি করবেন তারা জাতীয় দুশমন হিসেবে বিবেচিত হবেন। তিনি অর্ধেক বাস চলাচল বিষয়ে নিজের মত ব্যক্ত করে বলেন জোড় নাম্বারের গণপরিবহন একদিন এবং বিজোড় নাম্বারের গাড়ীগুলি যদি অন্যদিন চলাচল করে তাহলে রাস্তায় অর্ধেক বাস চলাচল নিশ্চিত হতে পারে।
গণপরিবহনগুলো যাতে গাদাগাদি করে যাত্রী পরিবহন না করে তার যথাযথ তদারকি করারও অনুরোধ জানান তিনি। এছাড়া যাত্রীদের কাছ থেকে যেন করোনার পূর্বের ভাড়া আদায় করা হয় সেজন্য নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটগণের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।
তাছাড়া করোনাকালীন সময়ে যারা দেশের অর্থনীতি ও বৈদেশিক মুদ্রার খাতকে চালু রেখেছেন তারা যাতে সরকারের সঠিক প্রণোদনা পায় সেদিকে লক্ষ্য রাখার জন্য সকলের প্রতি উদাত্ত আহবান জানান সুজন।

সোস্যাল নেটওয়ার্ক

সর্বশেষ সংবাদ