নিজস্ব প্রতিবেদকঃ২৩সেপ্টেম্বর
১৫ দফা দাবির মধ্যে যৌক্তিক দাবিগুলো আগামী তিন মাসের মধ্যে সমাধানের আশ্বাসে ৩৬ ঘণ্টা পর কর্মবিরতি প্রত্যাহারের ঘোষণা দেয় পরিবহন মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের নেতারা। গতকাল বুধবার দুপুরে পরিবহন মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের নেতারা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের সঙ্গে বৈঠক শেষে কর্মবিরতি প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন। ফলে ১৫ দফা দাবিতে মঙ্গলবার ভোর ৬টা থেকে সারাদেশে শুরু হওয়া কর্মবিরতি ৩৬ ঘণ্টা পর শেষ হয়ে পণ্য পরিবহনের অচলাবস্থার অবসান হলো।
সংশোধিত সড়ক পরিবহন আইন গেজেট আকারে প্রকাশের আগ পর্যন্ত আইনের প্রয়োগ স্থগিত রাখা, মোটরযানের ওপর অগ্রিম আয়কর সংক্রান্ত বিষয়টি আগামী তিন মাসের মধ্যে সমাধানসহ বিভিন্ন দাবি পূরণের আশ্বাসে পর পণ্যবাহী যান চলাচল শুরু করে গতকাল বিকেল থেকে।
এদিকে টানা ৩৬ ঘণ্টার কর্মবিরতির পর পণ্যবাহী যান চলাচল শুরুর সাথে সাথে গতকাল বিকেলে চট্টগ্রাম বন্দর এলাকায় বেড়ে যায় পণ্যবাহী গাড়ির চাপ। এতে দীর্ঘ সময় জ্যামে পড়তে হয় ওই এলাকা দিয়ে যাতায়াতকারী মানুষজনকে।
বাংলাদেশ ট্রাক-প্রাইম মুভার পণ্য পরিবহন মালিক এসোসিয়েশনের মহাসচিব চৌধুরী জাফর উল্লাহ বলেন, ‘আমাদের দাবিগুলো আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে তিন মাসের মধ্যে সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। এরপর আমরা কর্মবিরতি প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছি।’
কর্মবিরতি প্রত্যাহারের পর আটকা পড়া পণ্যবোঝাই ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান-লরি চট্টগ্রাম বন্দর থেকে বের হয়ে গন্তব্যের উদ্দেশে রওনা দেয়। আমদানি পণ্যবোঝাই কনটেইনারগুলোও চট্টগ্রাম বন্দর থেকে বের হতে শুরু করে। অন্যদিকে রপ্তানি পণ্যবোঝাই কনটেইনারগুলো বিভিন্ন ডিপো থেকে বন্দরমুখী হয়েছে। ফলে জাহাজে পণ্য ওঠানামায়ও গতি ফিরেছে।
বন্দরের সচিব মো. ওমর ফারুক বলেন, বিকেল ৪টা থেকে পণ্য পরিবহন শুরু হয়েছে। পণ্যবাহী পরিবহন বন্ধ থাকার কারণে আমাদের কিছু সমস্যা হয়েছে। জাহাজে রপ্তানি পণ্যবোঝাই বিলম্বিত হয়েছে। এখন আমরা দ্রুততার সঙ্গে রপ্তানি পণ্য জাহাজে তোলার নির্দেশনা দিয়েছি, যেন দ্রুততম সময়ের মধ্যে জাহাজ ছেড়ে যেতে পারে।’
মঙ্গলবার পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের ডাকা কর্মবিরতিতে থমকে গিয়েছিল চট্টগ্রাম বন্দরের কার্যক্রম। আমদানি পণ্য খালাস ও রপ্তানি পণ্য বন্দরে প্রবেশ করতে না পারলেও বন্দরের অভ্যন্তরে চলছিল কিছু রুটিন কাজ।
চট্টগ্রাম বন্দরে প্রতিদিন তিন থেকে সাড়ে চার হাজার ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান-প্রাইম মুভার যাতায়াত করে। তিন থেকে সাড়ে তিন থেকে সাড়ে চার হাজার টিইইউস কনটেইনার খালাস হয়। কিন্তু কর্মবিরতির কারণে আড়াই হাজার টিইইউস কনটেইনার খালাসের অপেক্ষায় থাকতে হয়।
১৯টি ডিপো থেকে প্রতিদিন প্রায় ৫ হাজার টিইইউস কনটেইনার জাহাজে পাঠনো হয়। পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের কর্মবিরতির কারণে টানা ৩৬ ঘণ্টা কোনো রপ্তানি পণ্য জাহাজে পাঠানো সম্ভব হয়নি। এতে একটি জাহাজ বুধবার চট্টগ্রাম বন্দর ত্যাগের কথা থাকলেও সেটি আটকে পড়েছে।