সাইবার ক্রাইমের হাত থেকে নগরবাসীকে সতর্ক থাকার আহবান ঃ খোরশেদ আলম সুজন

বিশেষ প্রতিবেদনঃ১৫সেপ্টেম্বর

সাইবার ক্রাইমের হাত থেকে নগরবাসীকে সতর্ক থাকার আহবান জানিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক প্রশাসক এবং চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন। মঙ্গলবার (১৪ সেপ্টেম্বর) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে তিনি নগরবাসীর প্রতি এ আহবান জানান।

এ সময় তিনি বলেন, নাগরিক জীবনে কর্মব্যস্ত নগরবাসী ডিজিটাল সুবিধাকে কাজে লাগিয়ে অনলাইন কিংবা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে আর্থিক কর্মকান্ড সারতে চায়। আর এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে সাইবার ক্রাইমের ফাঁদে ফেলে সাধারণ গ্রাহকদের সর্বস্বান্ত করছে অপরাধী চক্র। প্রতিনিয়ত সার্ভিসের নামে এটিএম কার্ড, ক্রেডিট কার্ড জালিয়াতি, বিকাশ, নগদসহ বিভিন্ন ব্যাংকিং চ্যানেলে জালিয়াতি করে চলেছে এক শ্রেণীর প্রতারক চক্র। আবার দেখা যাচ্ছে যে কম্পিউটার সার্ভিস দেয়ার নাম করে সফটওয়্যার ইনস্টলের মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যক্তির ব্যাংকিং তথ্য সংগ্রহ করে সে তথ্য দিয়ে ব্যাংক একাউন্ট হ্যাক করা হচ্ছে।

আবার এক শ্রেণীর প্রতারক চক্র বিভিন্ন ব্যাংকের গ্রাহকদের ডিটেইলস সংগ্রহ করে। এরপর ব্যাংকে গ্রাহক পরিচয় দিয়ে কৌশলে পরিবর্তন করে একাউন্টের এসএমএস অ্যালার্ট নাম্বার ও মেইল আইডি। এরপর ওই ব্যাংকের অ্যাপ ডাউনলোড করে ওই গ্রাহকের একাউন্ট থেকে বিভিন্ন একাউন্টে টাকা ট্রান্সফার করে নেয়। এভাবেই চলতে থাকে ভয়াবহ প্রতারণা।

এছাড়া এটিএম জালিয়াতির কৌশল হিসেবে অত্যাধুনিক স্কিমিং মেশিন ব্যবহার করা হচ্ছে বলে অনুমান করছেন সাইবার বিশেষজ্ঞরা। যা দিয়ে এটিএম মেশিন থেকে টাকা তোলার সাথে সাথেই তার কার্ডের পিন ও তথ্য তৎক্ষণাৎ চলে যাচ্ছে হ্যাকারদের হাতে। সেই তথ্য দিয়েই নকল কার্ড তৈরির মাধ্যমে টাকা তুলে নিচ্ছে হ্যাকারদের দল। আবার কোনো কোনো ব্যাংক কমর্ককর্তার সাথেও যোগসাজশ রয়েছে এসব অপরাধী চক্রের।

এরকমই একটি প্রতারক চক্রের কবলে পড়ে গত ১৩ সেপ্টেম্বর মোস্তফা হাকিম কলেজের বাংলা বিভাগের প্রভাষক ফারহানা আকতারের কাছ থেকে কৌশলে ক্রেডিট কার্ডের পাসওয়ার্ড পরিবর্তনের কথা বলে ৫০ হাজার হাতিয়ে নেয় প্রতারক চক্র। এ ব্যাপারে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে নগরীর আকবর শাহ থানায় মামলা রুজু করেন ঐ গ্রাহক।

তবে ব্যাংক, বিকাশ, নগদসহ অন্যান্য ব্যাংকিং চ্যানেলে প্রতিনিয়ত জালিয়াতির ফাঁদে পড়লেও অনেক ভুক্তভোগীই ঝামেলায় জড়ানোর ভয়ে আইনের আশ্রয় নিতে চান না। সম্প্রতি বিভিন্ন গ্রাহকের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়ার ঘটনায় জনমনে উদ্বেগ উৎকন্ঠা ছড়িয়ে পড়েছে।

এ থেকে পরিত্রাণের লক্ষ্যে তিনি বলেন, সাইবার সিকিউরিটির ব্যাপারে গ্রাহকদের আরো সতর্ক থাকতে হবে। মোবাইলে কারো কাছে কোনো প্রকার তথ্য দেয়া যাবে না। পিন নাম্বার পরিবর্তন কিংবা অফারের নামে অপরিচিত কোনো ফোন রিসিভ করলেও বেশিক্ষণ কথা না বলার আহ্বান জানান তিনি। কোনো প্রকার আর্থিক কর্মকান্ড থাকলে সরাসরি ব্যাংক কিংবা ডিজিটাল ব্যাংকিং এর কাস্টমার কেয়ার সেন্টারে যোগাযোগ করার অনুরোধ সুজনের।

অনুসন্ধানে দেখা গেছে, এসব প্রতারণায় বাংলালিংক নাম্বারই বেশি ব্যবহার হচ্ছে। তাই মোবাইল অপারেটরদেরও গ্রাহকদের সুরক্ষা দেয়ার বিষয়টি গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করার অনুরোধ জানান তিনি। তাছাড়া বিভিন্ন ব্যাংকে সাইবার সিকিউরিটি সিস্টেমকে আরো আধুনিক করে গড়ে তোলার পরামর্শ দেন তিনি। গ্রাহকদের একাউন্টকে কিভাবে সিকিউরিটির আওতায় আনা যায় সেদিকে নজর দেয়ার আহ্বান জানান সুজন।

পরিশেষে এসব অপরাধ নিয়ন্ত্রণে গ্রাহকদের সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখতে হবে বলে মত প্রকাশ করেন তিনি। এ ধরণের অপরাধীদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্ঠান্তমূলক শাস্তি প্রদান ও এদের সমুলে উৎপাটন করতে নিয়মিত সাড়াশি অভিযান পরিচালনা করার জন্য আইনশৃংখলা বাহিনীর প্রতি বিনীত অনুরোধ জানান খোরশেদ আলম সুজন।

সোস্যাল নেটওয়ার্ক

সর্বশেষ সংবাদ