প্রাচীনকাল থেকে কালিজিরা মানবদেহের নানা রোগের প্রতিষেধক এবং প্রতিরোধক হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে। এ জন্যই এই জিনিসটিকে অনেকে কালিহিরা বলেন। এটি শুধুই একটি মসলা নয়। এর কাজ শুধু খাবারের স্বাদ বৃদ্ধিতেই নয়, আয়ুর্বেদিক ও কবিরাজি চিকিৎসায়ও কালিজিরার ব্যবহার হয়। কালিজিরার বীজ থেকে একধরনের তেল তৈরি হয়, যা আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এতে আছে ফসফেট, আয়রন এবং ফসফরাস। এ ছাড়া কালিজিরা বিভিন্ন রোগের হাত থেকে দেহকে রক্ষা করে।
কালিজিরার অনেক ধরনের উপকারিতা পাওয়া যায়। যার কয়েকটি নিম্নে তুলে ধরা হলো—
► মাথা ব্যথা সারাতে কালিজিরার তেল দারুণ উপকারী। কালিজিরার তেল কপালে মালিশ করলে এবং তিন দিন খালি পেটে ১ চা চামচ তেল খেলে আরোগ্য লাভ করা যায়।
► চুলপড়া নিরাময়েও কালিজিরার বিশেষ গুণ রয়েছে। এক সপ্তাহ ধরে নিয়মিত চুলে শ্যাম্পু করার পর তা ভালোভাবে শুকিয়ে পুরো মাথায় কালিজিরার তেল ভালোমতো লাগালে চুলপড়া অনেক কমে যাবে।
► হাঁপানির রোগীরা বুকে ও পিঠে কালিজিরার তেল মালিশ করলে উপকার পাওয়া যায়।
► কালিজিরার তেল ও চূর্ণ ডায়াবেটিসের জন্য উপকারী। নিয়মিত খেলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে।
► চা বা গরম জলের সঙ্গে কালিজিরার তেল মিশিয়ে পান করলে হৃদেরাগে যেমন উপকার পাওয়া যায়, তেমনি শরীরের বাড়তি মেদও কমে। দই ও কালিজিরার মিশ্রণ প্রতিদিন এক মাস ধরে খেলে ১৫ কেজি পর্যন্ত ওজন কমানো যায় বলে যুক্তরাষ্ট্রের এক বিশ্ববিদ্যালয়ের সমীক্ষায় জানা গেছে।
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, এই মিশ্রণ শরীরের মেটাবলিজম কয়েক গুণ বাড়িয়ে দেয়। যার ফলে মেদের পরিমাণ কমতে থাকে। সেই সঙ্গে দ্রুত হ্রাস পায় দেহের ওজন। সমীক্ষার রিপোর্ট অনুযায়ী ৪৪ জন মেদযুক্ত মানুষের ওপর এ মিশ্রণের প্রভাব পরীক্ষা করে দেখা গেছে, প্রতিদিন যদি দই ও জিরার এই মিশ্রণ খাওয়া যায়, তা হলে এক মাসের মধ্যে অন্তত ১৫ কেজি ওজন কমানো সম্ভব।
► পেটের গ্যাসের সমস্যার জন্যও কালিজিরা বেশ উপকারী। এক কাপ দুধ ও এক চা চামচ কালিজিরার তেল একসঙ্গে মিশিয়ে দৈনিক পান করলে গ্যাসের সমস্যা কমে যায়।
► যাদের উচ্চ রক্তচাপ আছে তারা কোনো না কোনোভাবে কালিজিরা খেলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। গরম ভাতের সঙ্গেও কালিজিরার ভর্তা খেতে পারেন।
► জ্বর হলে সকাল-সন্ধ্যায় লেবুর রসের সঙ্গে কালিজিরার তেল খেতে পারেন। জ্বর দ্রুত সেরে যাবে।
► হাঁটুর ব্যথা সারাতে রোজ রাতে কালিজিরার তেল হাঁটুতে মালিশ করুন, হাঁটুর ব্যথা কমে যাবে। এ ছাড়া বাতের ব্যথা সারাতে কালিজিরার তেল নিয়মিত মালিশ করা যেতে পারে।
► ছুলি বা শ্বেতী হলে আক্রান্ত স্থানে আপেলের টুকরো দিয়ে ঘষে নিন, তারপর কালিজিরার তেল লাগান। এভাবে ১৫ দিন থেকে এক মাস পর্যন্ত লাগান।