কিশোরগঞ্জ সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রাবাস, খেলার মাঠ, পুকুরসহ ১২০ কোটি টাকার জমি দখল করে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বিয়াম ল্যাবরেটরী স্কুল নির্মাণের প্রতিবাদে আন্দোলনে নেমেছে বিদ্যালয়ের বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থীরা। তাদের দাবির প্রতি একাত্মতা জানিয়েছেন শিক্ষকরাও। ছাত্রাবাসসহ জমি দখলমুক্ত করার দাবিতে রোববার (৮ মার্চ) সকালে ক্লাস বন্ধ রেখে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল করে শিক্ষার্থীরা।
২০০৬ সালে বিএনপি-জামায়াত সরকার ক্ষমতায় থাকার সময় শহরের আলোর মেলা এলাকায় অবস্থিত কিশোরগঞ্জ উচ্চ বালক বিদ্যালয়ের ছাত্রাবাস দুই বছরের জন্য ভাড়া নিয়ে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে নির্মাণ করা হয় বিয়াম ল্যাবরেটরী স্কুল। ওই সময়কার সমাজকল্যাণ মন্ত্রী আলী আহসান মোহাম্মদ মোজাহিদ স্কুলটি উদ্বোধন করেন। তবে গত এক যুগ ধরে বিয়াম কোনো ভাড়া দিচ্ছে না স্কুলকে। এমনি স্কুলের ছাত্রাবাস, বিশাল খেলার মাঠ, পুকুরসহ ১২০ কোটি টাকার ছয় একর জায়গা অবৈধভাবে দখল করে রেখেছে বিয়াম স্কুল কর্তৃপক্ষ। খেলার মাঠে বসানো হচ্ছে বিভিন্ন মেলা। বার বার উদ্যোগ নিয়েও স্কুলের জমি দখলমুক্ত করা যাচ্ছে না। এ অবস্থায় আন্দোলনে নামে স্কুলটির বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থীরা।
সকালে ক্লাস বন্ধ রেখে স্কুল মাঠে বিক্ষোভ সমাবেশ এবং শহরে বিক্ষোভ মিছিল করে তারা। বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র আওয়ামী লীগ নেতা আনোয়ার কামালের সভাপতিত্বে আয়োজিত সমাবেশে বক্তব্য দেন কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মাসুদ আল মামুন খান, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক একেএম আবদুল্লাহ, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান শেখ সেলিম কবির, প্রাক্তন ছাত্র শিপন করিম, মাহমুদুল হাসান, খালেদ শামস তুষার, খালেদ মোসাদ্দেক টুটু, কামরুল ইসলাম উজ্জ্বলসহ অন্যরা।
বিদ্যালয়ের ১৯৭২ ব্যাচের ছাত্র আওয়ামী লীগ নেতা ও মুক্তিযোদ্ধা মো. আনোয়ার কামাল বলেন, বিদ্যালয়ের ছাত্রাবাস ও খেলার মাঠ দখলমুক্ত করতে কঠোর আন্দোলন হবে। আমাদের স্কুলের জমি দখলমুক্ত করেই ঘরে ফিরবো। একই দাবিতে আগামী ২১ মার্চ বিদ্যালয় মাঠে অবস্থান ধর্মঘটের ঘোষণা করেন তিনি।
এ দিকে অন্দোলন করার অধিকার সবারই আছে উল্লেখ করে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি নিষ্পত্তির উদ্যোগ নেয়া হবে বলে জানান কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. সারওয়ার মুর্শেদ চৌধুরী।
১৮৮১ সালে প্রতিষ্ঠিত কিশোরগঞ্জ সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ে বর্তমানে দুই শিফটে এক হাজার ২০০ শিক্ষার্থী লেখাপড়া করছে। কিন্তু ছাত্রাবাস দখল হয়ে যাওয়ায় শিক্ষার্থীদের শহরের বিভিন্ন এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতে হচ্ছে।