হোসেন বাবলাঃ১১আগস্ট
সারাদেশ ব্যাপী গণটিকা কার্যক্রম এবং নিয়মিত নিবন্ধন করা করোনা টিকা নিতে অনেকটা মরিয়া হয়ে উঠেছেন অনেকেই। প্রতিদিন গড়ে ২ লাখের বেশি নতুন টিকা গ্রহণেচ্ছুদের নিবন্ধন জমা পড়ছে সুরক্ষা অ্যাপের সার্ভারে।
বর্তমানে স্বপ্রণোদিত হয়ে টিকা গ্রহণের প্রচন্ড ভিড়ের কারণে টিকা কেন্দ্রগুলোই এখন করোনা সংক্রমণের অন্যতম উৎসে পরিণত হবার সম্ভবনা বলে বিশেষজ্ঞ স্বাস্থ্য চিকিৎসক , সাবেক স্বাস্থ্য পরিচালক-মেডিক্যাল অফিসার এবং গণশিক্ষা-স্বাস্থ্য ওএনজিওর নেতৃবৃন্দরা অভিমত প্রকাশ করছেন।
এক সময় করোনা টিকা গ্রহণে মানুষের মধ্যে অনীহা দেখা গেলেও বর্তমানে টিকা গ্রহণে মানুষের মধ্যে প্রবণতা বাড়লেও বাড়েনি তাদের মধ্যে স্বাস্থ্য সচেতনতা। আবার মোবাইল ফোনে কোন মেসেজ না পেয়েও কেন্দ্রেগুলোতে অবাঞ্ছিত ভিড় অনেকটা নিত্য ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। এতে টিকা কেন্দ্রগুলোতে উপেক্ষিত হচ্ছে স্বাস্থ্যবিধি।
চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ও স্বাস্থ্য পরিচালকের স্বাস্থ্য বিষয়ক তথ্যসূত্রে জানা যায় যে, প্রতিদিন নগরীতে গড়ে ১০ জন করে করোনা আক্রান্ত রোগী মৃত্যুবরণ করছে। গতকাল মঙ্গলবার ও আজ বুধবার(১১আগস্ট) দুপুরে নগরীর বেশ কয়েকটি টিকা কেন্দ্র গুলোতে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় লাইনে দাড়াঁনো সারি সারি জনসাধারণে মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনের চিত্র লক্ষ্য করা যায়নি।
গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি আবার কখনো রোদের তাপ সহ্য করে করোনার টিকা নিতে আসা মানুষের দীর্ঘ লাইন এতে নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় না রেখে মানুষ দাঁড়িয়ে আছে।এমনকি লাইনের কেউ কেউ চাইছেন সামনের জনকে ঠেলে টিকা কেন্দ্রের ভেতরে প্রবেশ করার।
এই চিত্র সবচেয়ে বেশী পরিলক্ষিত হয়েছে বন্দর, ইপিজেড ওপতেঙ্গা-হালিশহর এলাকার টিকা কেন্দ্রগুলোতে, তার মধ্যে বন্দরের ধোপপুলস্থ ৩৮নং ওয়ার্ড অফিসের টিকা কেন্দ্রেটি উল্লেখ যোগ্য । এখানে অনেকেই টিকা নিবন্ধন করেই টিকার কোন মেসেজই না পেয়েও নিবন্ধন কার্ড নিয়ে লাইনে দাড়িঁয়েছে এমনও অনেকে ছিলেন ঘন্টার পর ঘন্টা দাড়িঁয়ে, কারণ টিকা নেয়ার জন্য ।
একই অবস্থা দেখেগেছে পতেঙ্গার কাটগড় -স্টিল মিল এলাকার টিকা দিতে আসা একাধিক নারী-পুরুষের লাইন এড়িয়ে তীব্র জটলার দৃশ্য।তেমনি ইপিজেডের হক সাহেব রোডস্থ মোহাম্মদীয়া স্কুল এবং নিউ মুরিংস্থ আহম্মদীয় সরকারী প্রাঃ বিদ্যালয় টিকা কেন্দ্রে এবং নিয়মিত টিকা কেন্দ্রে বন্দরটিলা মাতৃসদনের নিচে-উপরে ওমূল কেন্দ্রে ভিড়ে ভিড়ে স্বাস্থ্য বিধি প্রায় উধাও।
আর শৃংখলাহীন ভাবে টিকা কেন্দ্র ছিল হালিশহর(২৬নং ওয়ার্ডের এলাকা),এখানে তিনটি সেন্টারেই কোন লাইন কিংবা নিবন্ধন কার্ড ছাড়াই শতশত লোক কে টিকা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্বাস্থ্যসহকারী ও টিকা কমিটির স্বেচ্ছাসেবকদের বিরুদ্ধে।
এব্যাপারে বন্দর ইপিআই জোনের জোনাল মেডিক্যাল অফিসার ডাঃ হাসান মুরাদ চৌধুরী বলেন, আমরা বারবার সরকার ঘোষিত টিকার এসএমএস ছাড়া কাউকে কেন্দ্রে না আসতে অনুরোধ জানাচ্ছি । সকল কেন্দ্রের সামনে ব্যানার-সাইনবোর্ড লাগিয়ে টিকা কেন্দ্রে ভিড় এড়াতে নিরুৎসাহী করছি।
তার পরও জনসাধারণ টিকার এসএমএস না পেয়ে অনলাইনে নিবন্ধন করেই টিকা নিতে চলে আসছে। যার ফলে করোনাভাইরাস সংক্রমক ও করোনা উপসর্গ দ্বিগুন বেড়ে যেতে পারে বলে ধারনা করছেন।আর এই অবস্থার রোধ করা না গেলে চট্টগ্রামে ভয়াবহ রূপ নিবে করোনা। বিশ্ব স্বাস্থ্যসংস্থাও এব্যাপারে বারবার ঘোষনা দিচ্ছে ভিড়-জনসমাগম রোধ করা না গেলে করোনাভাইরাস অতিমাত্রাই সংক্রমিত হবে।