সবুজ প্রবৃদ্ধি ও বিনিয়োগের পরিমাণ বৃদ্ধিকে প্রাধান্য দিয়ে উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদারিত্বের সম্পর্ক জোরদার চায় নর্ডিক দেশগুলো। শনিবার রাজধানীর একটি হোটেলে এক সংলাপে এ প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ঢাকায় তিন নর্ডিক দেশ ডেনমার্ক, নরওয়ে ও সুইডেনের রাষ্ট্রদূতেরা।
নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে সমুদ্র অর্থনীতি ও জলবায়ু পরিবর্তনসহ তাদের অগ্রাধিকারের খাতগুলো সম্পর্কেও তারা ধারণা দেন। বাধা অতিক্রম করে বাংলাদেশে বিনিয়োগ সহজীকরণের বিষয়গুলোও তুলে ধরেন এ তিন দেশের রাষ্ট্রদূত।
ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব সিঙ্গাপুরের ইনস্টিটিউট অব সাউথ এশিয়ান স্টাডিজের প্রিন্সিপাল রিসার্চ ফেলো ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী সংলাপে সভাপতিত্ব করেন। এতে স্বাগত বক্তব্য দেন কসমস ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান এনায়েতুল্লাহ খান।
সংলাপে কূটনৈতিক, কূটনীতি বিশেষজ্ঞ, সুশিল সমাজের প্রতিনিধিরা অংশ নেন। কসমস গ্রুপের জনহিতকর প্রতিষ্ঠান কসমস ফাউন্ডেশন, ‘কসমস সংলাপের অ্যাম্বাসেডর লেকচার সিরিজের’ অধীনে এ সংলাপের আয়োজন করা হয়।
চলমান রোহিঙ্গা সংকেটর সমাধান চাওয়ার পাশাপাশি তিন নর্ডিক দেশের রাষ্ট্রদূত বলেন, জাতিসংঘের শীর্ষ আদালত- আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিজে) কর্তৃক অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ জবাবদিহির আওতায় আনার ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। রোহিঙ্গাদের নিরাপদে তাদের নিজ দেশে ফেরত নেয়ার দায়িত্বও মিয়ানমারের। রোহিঙ্গা সংকট সমাধানের পাশাপাশি বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের নিরাপদে নিজ ভূমি রাখাইনে ফেরাতে কার্যকর উদ্যোগ নিতে মিয়ানমারের প্রতি আহ্বান জানান তারা।
নরওয়ের রাষ্ট্রদূত সিডসেল ব্লেকেন আশা প্রকাশ করে বলেন, আমরা আশা করেছিলাম, আইসিজের অন্তর্বর্তীকালীন রায়ের পর মিয়ানমার তা পুরোপুরি ভাবে-ই মেনে চলবে। কিন্তু তারা এর কাছ দিয়েও যায়নি, যা খুবই দুঃখজনক।
সুইডেনের রাষ্ট্রদূত চার্লোটা স্লাইটার বলেন, আদালতের রায় মেনে নিয়ে মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরত নেবে, আমরা তাই-ই প্রত্যাশা করেছিলাম। কিন্তু তারা সেটা করেনি।
রাষ্ট্রদূতেরা কক্সবাজার ক্যাম্পে অবস্থানরত রোহিঙ্গা এবং তাদের আশ্রয়দানকারী স্থানীয়দের জন্য সহায়তা কার্যক্রম অব্যাহত রাখার আশ্বাসও দিয়েছেন।
এদিকে, শ্রম অধিকারসহ এবং অন্যান্য অধিকার সম্পর্কিত বিষয়গুলো, বেসরকারি খাতের ভূমিকা, সমুদ্র দূষণ, জলবায়ু পরিবর্তন, নদী দূষণ, বায়ু দূষণ, নারী অধিকার এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রাসহ (এসডিজি) সংলাপে আরও নানা বিষয়ে আলোচনা হয়। বাংলাদেশের সঙ্গে তাদের অংশীদারিত্বকে ‘অত্যন্ত গভীর ও দীর্ঘস্থায়ী’ অভিহিত করে রাষ্ট্রদূতরা বলেন, তাদের দেশগুলোকে আরও বেশি ভালো সম্পর্ক অর্জন করতে হবে।
উল্লেখ্য, পাঁচ নর্ডিক দেশ- ডেনমার্ক, ফিনল্যান্ড, আইসল্যান্ড, নরওয়ে এবং সুইডেন- সবাই ১৯৭২ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি একই দিনে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়।