প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নৌকাবিরোধী কুমিল্লার ৬ জনসহ মোট ১৯২ নেতাকে ক্ষমা করেছেন। আওয়ামী লীগের নেতা হওয়ার পরও এই নেতারা সাম্প্রতিক সময়ে অনুষ্ঠিত উপজেলা নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর বি’রুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিলেন।
অবশ্য শর্ত সাপেক্ষে তাদের শেষবারের মতো ক্ষমা করা হয়েছে। একই সঙ্গে ভবিষ্যতে সংগঠনবি’রোধী কোনো কর্মকাণ্ডে জ’ড়িত হলে তা ক্ষমার অ’যোগ্য বলে গণ্য করার কথাও তাদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এর ফলে ক্ষমাপ্রাপ্ত নেতারা আওয়ামী লীগের তৃণমূল পর্যায়ের সম্মেলন কার্যক্রমে অংশ নিতে পারবেন। এমনকি নেতা নির্বাচনেরও সুযোগ পাবেন।
আগামী ২০-২১ ডিসেম্বর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠেয় দলের ২১তম জাতীয় কাউন্সিলকে কেন্দ্র করে বর্তমানে সাংগঠনিক জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সম্মেলন চলছে।
তবে উপজেলা নির্বাচনে দলের বি’দ্রোহী প্রার্থীদের ওই সম্মেলন কার্যক্রমে রাখা হয়নি বলে কয়েকজন নীতিনির্ধারক নেতা জানিয়েছেন। এমনকি বি’দ্রোহী নেতারা সংগঠনের কোনো পর্যায়ের নেতা নির্বাচনের সুযোগও পাচ্ছেন না।
এরই মধ্যে কয়েকটি উপজেলা শাখার সম্মেলনে তারা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী হতে পারেননি। তবে প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমা পাওয়ার পর থেকে ওই নেতারা জেলা-উপজেলাসহ তৃণমূল পর্যায়ের সম্মেলন কার্যক্রমে অংশ নিতে পারছেন।
প্রধান দুই সাংগঠনিক পদ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ বিভিন্ন পদ-পদবিতে থাকার সুযোগ পাচ্ছেন। দলের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের গত ২১ অক্টোবর বি’দ্রোহী নেতাদের কাছে পাঠানো চিঠিতে বলেছেন, ভবিষ্যতে সংগঠনের স্বার্থ পরিপন্থি কার্যক্রম ও সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গ না করার শর্তে তাদের ক্ষমা করা হয়েছে।
এর পর থেকেই তারা সাংগঠনিক সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন। উপজেলা নির্বাচনে বিদ্রোহীদের মধ্যে ১২৬ জন চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়েছেন। এই চেয়ারম্যানরাসহ ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর বি’রুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতার অ’ভিযোগে দলীয় গঠনতন্ত্রের ৪৭(ক) ধারা অনুযায়ী বি’দ্রোহী প্রার্থীদের কারণ দর্শানোর চিঠি দেওয়া হয়।
তাদের মধ্যে ১৯২ জন সংগঠনবিরোধী কর্মকাণ্ডের কথা স্বীকার করে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার কাছে ক্ষ’মা চেয়ে চিঠি দিয়েছেন। একই সঙ্গে তারা ভবিষ্যতে সংগঠনের গঠনতন্ত্র, নীতি ও আদর্শ পরিপন্থি কোনো কার্যক্রমে সম্পৃক্ত না হওয়ার অঙ্গীকার করেছেন।
প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমাপ্রাপ্ত কুমিল্লার ৬ আওয়ামী লীগ নেতারা হলেন- কুমিল্লা উত্তর জেলার সদস্য মজিবুর রহমান, কুমিল্লা উত্তর জেলার বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক আবদুস সালাম, কুমিল্লার মেঘনা উপজেলার সাংগঠনিক সম্পাদক তাজুল ইসলাম তাজ, বুড়িচং উপজেলার যুগ্ম আহ্বায়ক আখলাক হায়দার, বরুড়া উপজেলা যুবলীগের সভাপতি সোহেল সামাদ, কুমিল্লা উত্তর জেলার সদস্য পারভেজ হোসেন সরকার।