টাঙ্গাইলে শহরস্থ বেতকা মুন্সিপাড়া ইসমাইল হোসেন ইসা রাজাকারের পুত্র কামরুল হাসান ঠান্ডু, জাহাঙ্গীর ও কাওসারের অত্যাচারে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী। বইছে সমালোচনার ঝড়।
স্বাধীনতার এই ৫০ বছরেও তাদের দাপট কমেনি। সম্প্রতি একটি ঘটনায় তারা আবার আলোচনা-সমালোচনায় এসেছে।
স্থানীয়রা জানান, ইসমাইল হোসেন ইসা স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান ছিল। এই এলাকায় তার প্রভাব ছিল। রাজাকাররা সব সময় তাকে পাহারা দিয়ে রাখতো। স্বাধীনতার পরপরই তিনি গণধোলাইয়ের শিকার হয়ে মারা যান। এখনও এই ইসমাইল হোসেন ইসা পরিবারের সদস্যদের দাপট কমেনি। তাদের দাপটে কেউ মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছে না। তাদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে এলাকাবাসী। যুদ্ধের সময় ইসা হিন্দুদের অনেক জমি বেদখল দিয়েছে। সম্প্রতি কুমুদিনী সরকারী কলেজের অনার্স ২য় বর্ষের এক শিক্ষার্থীকে জিম্মি করে রেখে নতুন করে আলোচনা এসেছে এই তিন রাজাকার পুত্র। পরবর্তীতে ৯৯৯ এ ফোন করে পুলিশি সহযোগিতায় ওই কলেজ ছাত্রীকে উদ্ধার করা হয়। এমনকি উদ্ধারের সময় ভুয়া অ্যাডভোকেট ক্যাডার জাহাঙ্গীরের নেতৃত্বে পুলিশের উপস্থিতিতে সাংবাদিকদের ওপর হামলার চেষ্টা করে এই তিন রাজাকার পুত্র। এছাড়া এই তিন রাজাকার পুত্র এবং সকল মেসে ভাড়া থাকা ছাত্রীদের নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করে। বিষয়টি এলাকায় বেশ আলোচনার ও নিন্দার ঝড় বইছে । স্থানীয়রা বিষয়টি তদন্তপূর্বক হিন্দুদের জমি ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানান। এছাড়াও তাদের দাপট থেকে মুক্তি চান।
স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধা মুন্সি আবুল খায়ের বলেন, ‘স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় ইসমাইল হোসেন ইসা শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান ছিল। এই এলাকায় তার প্রভাব ছিল। রাজাকাররা সব সময় তাকে পাহারা দিয়ে রাখাতো। পাকিস্তান আমলে তার অত্যাচারে এলাকাবাসী অতিষ্ঠ ছিল। দাপট ছিল বলেই অনেক সম্পত্তি করেছে। হিন্দুদেরও জমি দখল করেছেন তিনি। স্বাধীনতার পরপরই তিনি পালিয়ে যান। পরে জনগণরা তাকে শহরের আশেকপুর এলাকায় ধরে নিয়ে মেরে ফেলে।’
স্থানীয় সাবেক কাউন্সিলর বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ আসাদুজ্জামান ছবুর বলেন, তৎকালীন ইসমাইল হোসেন ইসা ছিল ভুমিদস্যু। অনেকের জমিজমা দখল করেছে। সব চেয়ে হিন্দু পরিবারের জমি সে বেশি দখল করেছে। একটি স্কুলও তিনি দখল দিয়েছিল। মুক্তিযোদ্ধা ও এলাকার নির্যাতিত কিছু মানুষ তাকে ধরে গণপিটুনি দিয়ে মেরে ফেলে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ ইসমাইল হোসেন ইসার ছেলে জাহাঙ্গীর ভূয়া আইনজীবী। সে এইচএস সি পর্যন্ত পড়া লেখা করেছে। ভূয়া সার্টিফিকেটের জন্য টাঙ্গাইল জেলা অ্যাডভোকেট বার সমিতি তাকে কোর্ট থেকে বের করে দিয়েছে। সে এখন গাজীপুরের আইনজীবী পরিচয় দিয়ে গাড়ির মধ্যে আইনজীবীর স্টিকার লাগিয়ে দাপটের সহিত চলাফেরা করছে।
কামরুল হাসান
টাঙ্গাইল প্রতিনিধি